বাংলাদেশে এনআরসির প্রভাব না পড়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছে ভারত
- সংসদ প্রতিবেদক
- ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনআরসি) ইস্যুটিকে বাংলাদেশ দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশের ওপর এর কোনো অযাচিত প্রভাব পড়বে না সে নিশ্চয়তা ভারত সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তরে এ কথা বলেন। বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে বিষয়টি উপস্থাপিত হয়।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। ভারতের সাথে আমাদের প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকার তাদের নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রদেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনআরসি) পরিকল্পনা নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে মনে করে। একইভাবে বিলটিকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিতর্ককে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। ভারত সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সাথে তাদের দৃঢ় পারস্পরিক বিশ্বাস, সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়ার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেবে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি আরো বলেন, বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিশেষ করে উত্তরোত্তর জিডিপি বৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। তাই বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারতে অবৈধ অভিবাসনের কোনো অর্থনৈতিক অনুপ্রেরণাবোধের যৌক্তিকতা আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। তিনি বলেন, সীমান্তে অবৈধ গমনাগমন, চোরাচালান প্রতিরোধসহ সীমান্তবর্তী অপরাধ দমনে সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বদাই সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা গ্রহণ করে থাকে। তবে বিজিবি সীমান্ত সংক্রান্ত অপরাধসহ যেকোনো ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সদা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। উদ্বেগজনক কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে বিজিবির অধীনস্থ রিজিওন/সেক্টর/ ব্যাটালিয়ন কর্তৃক সীমান্তবর্তী এলাকায় টহল জোরদারসহ গোয়েন্দা ও সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। একই সাথে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরেও প্রয়োজনে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তিনি আরো বলেন, ‘সীমান্ত রক্ষা তথা চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্তে ৬৯৭টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। বিওপিগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিজিবি কর্তৃক নিয়মিত প্রেষণ দেয়া হচ্ছে।
উগ্রবাদ দমনে বিশ্বে রোল মডেল : এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, বাংলাদেশের উগ্রবাদ দমনে সফলতা বিশ্বে রোলমডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
তিনি বলেন, উগ্রবাদী সৃষ্টির মূল শিকড় চিহ্নিত করে তা নির্মূলে বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উগ্রবাদ হামলা প্রতিরোধে কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত, সাজাপ্রাপ্ত ও আটক উগ্রবাদীদের নিবিড় নজরদারির ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা