২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সীমান্ত হত্যায় বিএসএফের দোষ দেখছেন না খাদ্যমন্ত্রী

-

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলি করে বাংলাদেশীদের হত্যা বন্ধ করতে হলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকদের সতর্ক হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নওগাঁ জেলার পোরশা সীমান্তে গত ২২ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে তিনজন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হন। যে সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে সে এলাকার সংসদ সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
রাজশাহীর পবা উপজেলায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তার নির্বাচনী এলাকার তিন ব্যক্তির মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলেন সাংবাদিকরা।
জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এখানে দোষ বাংলাদেশী নাগরিকদেরই, সুতরাং সরকারের কিছুই করণীয় নেই। তিনি বলেন, আমরা গরুর বিট খুলতে দেব না। আমাদের উপজেলায় রেজুলেশন আছে, বিজিবির রেজুলেশন আছে, জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে রেজুলেশন আছে। তারপরেও কেউ যদি জোর করে কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে যায় আর ভারতের মধ্যে গুলি খেয়ে মারা যায়, তার দায়দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে প্রায় সাড়ে ৩০০ বাংলাদেশী নাগরিককে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। অথচ উভয় দেশ গত ১০ বছর পরস্পরকে সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করছে। চলতি বছরের প্রথম ২৫ দিনেই প্রায় ১০ জন বাংলাদেশী বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছে। অনেকে সমালোচনা করেন, সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে সরকারের যতটা সরব হওয়া উচিত, ততটা তারা হচ্ছে না।
উল্টো বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের সাথে সম্পৃক্ত কিংবা সরকারি কর্মকর্তারা এমন বক্তব্য দিচ্ছেন, যাতে বাংলাদেশীদের দোষ বেশি - এমনটাই তুলে ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, কোনোভাবেই সীমান্তে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত নয়।
বাংলাদেশ সরকার বরাবরই দাবি করে যে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ এবং প্রতিবাদ ভারত সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়। অন্য দিকে বিএসএফ বলে, সীমান্তে তাদের সদস্যরা আক্রান্ত হলেই কেবল গুলি করে।
২০১১ সালে কুড়িগ্রাম সীমান্তে কিশোরী ফালানি খাতুনকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর বিএসএফ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড তারা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করবে এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে না। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু দিনের মধ্যে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এটা স্পষ্ট যে সেই নীতি মেনে চলা হচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement