২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আইসিজের আদেশকে স্বাগত জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের

দ্রুত বাস্তবায়ন চায় জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন; প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার
-

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিজে) আদেশকে স্বাগত জানিয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেজ বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি মিয়ানমার আইসিজের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন করবে।
অন্য দিকে বিশ্ব আদালতের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাখাইন পরিস্থিতির খণ্ডিত চিত্র পর্যবেক্ষণ করে আইসিজে এ নির্দেশনা দিয়েছে।
গতকাল নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অ্যান্তনিও গুতেরেজকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, গণহত্যা সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের সনদ ও আইসিজের সংবিধি মেনে চলা এবং সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক।
ফারহান হক বলেন, আন্তর্জাতিক বিরোধগুলো শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুরাহাকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব জোরালোভাবে সমর্থন করেন। এ দিকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, মিয়ানমার নিজস্ব কমিশন এবং স্বাধীন কমিশন কয়েক দফা তদন্ত করে রাখাইনে গণহত্যার কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি। তবে সেখানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ সমস্যার সমাধান মিয়ানমার নিজস্ব বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে চায়।
এ ছাড়া মিয়ানমারের সাথে কয়েকটি দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটানো এবং রাখাইনে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার দায়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নিন্দা জানিয়েছে।
দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান : জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় গতকাল জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে গণহত্যা সনদের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী মিয়ানমারকে কোনো রকম শর্ত ছাড়াই দ্রুততার সাথে আইসিজের আদেশ পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জনিয়েছে। কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, আইসিজের বিচার প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংসতা ও গুরুতর দমন-পীড়নের জন্য মিয়ানমারের দায় নিরূপণের বিচারের দ্বার উন্মোচন করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইসিজের পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক তদন্ত ও জবাবদিহিতার প্রক্রিয়া চলছে। এ সব তদন্তে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দেয়ার পাশাপাশি রাখাইনে সব ধরনের মানবাধিকার নিয়ে রোহিঙ্গাদের শান্তিতে ও মর্যাদার সাথে বসবাসের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এতে বলা হয়, আইসিজের পর্যবেক্ষণে বেশ কয়েকবার জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ম্যান্ডেটে মিয়ানমার ইস্যুতে গঠিত আন্তর্জাতিক স্বাধীন তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদন ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার পুনরাবৃত্তির গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে। এতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সব মানুষের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং টেকসই শান্তির জন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান হওয়া প্রয়োজন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে সক্রিয় হতে হবে : ব্রিটেন
অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আইসিজের আদেশকে স্বাগত জানিয়ে এশিয়া-প্যাসেফিক বিষয়ক ব্রিটিশমন্ত্রী হেথার উইলার রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে আরো সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আইসিজের আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট সুরাহায় আনান কমিশনের সুপারিশগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারকে উৎসাহিত করেছেন। ব্রিটিশ মন্ত্রী রাখাইন পরিস্থিতি তদন্তে মিয়ানমার সরকার গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ঘটনা নানামুখী ব্যাখ্যার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও এই কমিশনের সুপারিশগুলো অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়ার দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে অবস্থিত আইসিজের বিচারকরা সর্বসম্মতভাবে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে আদেশ দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত সনদের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী মিয়ানমার তার ভূখণ্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের কোনো সদস্যকে হত্যা, শরীরিক বা মানসিকভাবে গুরুতর আঘাত, সম্প্রদায়কে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ এবং তাদের সন্তান জন্মদানে বাধা প্রদানে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবে না। মিয়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে তার সামরিকবাহিনী অথবা তার নির্দেশনায় পরিচালিত, নিয়ন্ত্রিত বা সমর্থিত কোনো অনিয়মিত সশস্ত্র ইউনিট, সংস্থা বা ব্যক্তি গণহত্যার ষড়যন্ত্র, গণহত্যায় উসকানি দান অথবা গণহত্যা সংঘটনে বিরত থাকে।
আদেশে বলা হয়, গণহত্যার অভিযোগের সাথে সংশ্লিষ্ট আলামত ধ্বংসের কোনো প্রচেষ্টা রোধ করে তথ্য-প্রমাণ সংরক্ষণে মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে নেয়া সব পদক্ষেপ সম্পর্কে মিয়ানমারকে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। এরপর চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাস অন্তর প্রতিবেদন দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী!  আমেরিকানরা কি ধর্ম থেকে সরে যাচ্ছে?

সকল