১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শিল্পে অস্বাভাবিক খেলাপি ঋণ

এক বছরে বেড়েছে ২৫ শতাংশ ; উদ্বেগ ও হতাশাজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা
-

ছোট-বড় সব ধরনের শিল্পেই খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। বলা চলে প্রতি ১০০ টাকায় ২৫ টাকা বেড়েছে এ খাতের খেলাপি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৫৪ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এ খাতেই বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। একটি খাতে এ অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়াকে হতাশা ও উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন ব্যাংকার ও উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, যেভাবে চলছে এটা উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হলে অর্থনীতিতে মোটেও সুখকর কিছু আশা করা যাবে না।
শিল্প খাতে অস্বাভাবিক খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়াকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্র্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই)। সভাপতি শামস মাহমুদ। তিনি গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন একটি খাতে খেলাপি ঋণ ২৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়া সত্যিই উদ্বেগের কারণ। তবে শিল্প খাতে এ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার পেছনে মূলত দু’টি কারণ উল্লেখ করেন তিনি। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অনেকেই শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ নেন। কিন্তু সেই ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা পরিশোধ করেন না। এটাকে তিনি ইচ্ছেকৃত খেলাপি ঋণ বলেন। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। আরেক ধরনের খেলাপি ঋণ আছে, যেটা প্রকৃত পক্ষেই খেলাপি হয়ে গেছে। আর তা হলো, একজন উদ্যোক্তা কারখানা করার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করলেন। জমি কিনে অবকাঠামো নির্মাণ করে তা স্থাপনও করা হলো। কিন্তু শিল্প চালু করার জন্য গ্যাস সংযোগ পাওয়া গেলো না। এতে ওই উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। সময়মতো কারখানা চালু করতে না পারায় ব্যাংক ঋণও সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকের খাতায় তিনি খেলাপি হয়ে গেলেন। এভাবে অনেক উদ্যোক্তাই ঋণখেলাপির খাতায় নাম লেখিয়েছেন। এটাকে তিনি অনিচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ হিসেবে দেখছেন। তিনি মনে করেন, সামগ্রিকভাবেই খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাড়ছে। আবার বর্তমান অবস্থায় অনেকেই কিছুটা চাপে রয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তিনি ঋণের সুদহার এক অঙ্ক কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
যেকোনো খাতে ২৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়াকে সত্যিই উদ্বেগ ও হতাশাজনক বলেন মনে করেন ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রেসিডেন্ট, ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার। যেখানে সবাই মিলে আমরা খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি, সেখানে একটি খাতে অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া মোটেও সুখকর নয়। তিনি গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়কে বাড়িয়ে দেয়। আর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে গেলে তাতে সুদহারে প্রভাব পড়ে। একই সাথে প্রভাব পড়ে সামগ্রিক খেলাপি ঋণ ও ব্যাংকের মুনাফার ওপর। তিনি মনে করেন, যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি, তাদেরকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে খেলাপি ঋণ আদায়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে জানা যায়, সেপ্টেম্বর শেষে শিল্প খাতে মোট ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে শিল্প ঋণ বেড়েছে ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ সময়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ৬৭ হাজার কোটি টাকা থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। আর বকেয়া স্থিতি আলোচ্য সময়ে প্রায় সাড়ে ১৭ শতাংশ বেড়ে ৪ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরে দুর্ঘটনায় মা-ছেলে নিহত, আহত বাবা-মেয়ে দিরাইয়ে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের পাঠ্যক্রম গ্রহণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বগুড়ায় পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকভর্তি কলা ছিনতাই : গ্রেফতার ৪ ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থী নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল স্নান করতে গিয়ে দূর্গাসাগর দীঘিতে ডুবে একজনের মৃত্যু ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে : শ্রিংলা মানবতার কল্যাণে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে হবে : জামায়াত আমির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭ ফিট তামিমকে যেকোনো ফরম্যাটের দলে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক বিকেবি ও রাকাব একীভূতকরণের প্রতিবাদে রাজশাহীতে মানববন্ধন

সকল