২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বিপিএলে রাজশাহী নতুন চ্যাম্পিয়ন

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি নিয়ে রাজশাহী রয়্যালস দলের উল্লাস : বিসিবি -

খুলনা এবার প্রথমবার ফাইনাল খেলেছে। রাজশাহী এর আগে একবার ফাইনাল খেললেও শিরোপা জিততে পারেনি। তামিম গত আসরে প্রথমবার ফাইনালে উঠেই জিতেছেন শিরোপা। তেমনটিই ভেবে রেখেছিলেন খুলনার কাপ্তান মুশফিকুর রহীম। কিন্তু না রাজশাহীর অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেলের আলরাউন্ড নৈপুণ্যে মাশরাফির স্বপ্নকে ভঙ্গ করে শিরোপা নিজের করে নিলো রয়্যালসরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৭০ রান করে রাজশাহী। জবাবে খুলনা ৮ উইকেটে ১৪৯ রানে গুটিয়ে গেলে ২১ রানের জয় নিয়ে বিপিএলে নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লিখায় রাজশাহী।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আগের আসরগুলোতে দাপট দেখিয়ে ঢাকা, কুমিল্লা আর রংপুরের দলগুলো শিরোপা ভাগাভাগি করেছে। তবে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এবারের বিশেষ বিপিএলে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেল বিপিএল। ২০১২ সালে প্রথম আসরে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স, ২০১৩ আসরে ঢাকার পুনরাবৃত্তি, ২০১৪ সালে বিপিএল হয়নি। ২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ২০১৬ সালে ঢাকা ডায়নামাইটস, ২০১৭ সালে রংপুর রাইডার্স এবং সর্বশেষ ২০১৯ আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চ্যাম্পিয়ন হয়। আর এবার রাজশাহী রয়্যালস।
মাঠে কোন দলের সমর্থক বেশি ছিল সেটি সঠিক বলা যাবে না। তবে শেষ ওভারে মাঠের ভেতর থেকে হাত উঁচিয়ে ইশারায় যখন গ্যালারিকে জাগিয়ে তুললেন আন্দ্রে রাসেল, তখন মনে হয়েছে সবাই যেন রাজশাহীরই সমর্থক। রাজশাহীর নামে শোনা গেল গর্জন। ভেপু এবং গগনবিদারী চিৎকারে চারপাশ প্রকম্পিত করা সেই আওয়াজেই ম্যাচ শেষে আনন্দ উদযাপন করলেন রাজশাহীর ক্রিকেটাররা।
মাঠে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাসেল। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তার বিধ্বংসী ইনিংস দলকে তুলেছিল ফাইনালে। শিরোপা লড়াইয়েও পার্থক্য গড়ে দিয়েছে তার পারফরম্যান্স। ব্যাট হাতে হার না মানা ২৭ রানের পর বল হাতে নিয়েছেন দু’টি উইকেট। যার একটি প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের। ফাইনালের আরেক নায়ক মোহাম্মদ নওয়াজ। টুর্নামেন্টের বেশির ভাগ ম্যাচে বাইরে বসে থাকা পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ফাইনালে জ্বলে উঠেছেন। ব্যাট হাতে ৪১ রানের পর বল হাতে নিয়েছেন রাইলি রুশোর গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
খুলনা ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারায়। দলীয় শূন্য রানে ফিরেন শান্ত। দলীয় ১১ রানে বিদায় নেন অপর ওপেনার মিরাজ। এরপর শামসুর ও রুশোর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় খুলনা। দু’জনে ৭৪ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৮৫ রানে এই জুটি ভাঙেন নওয়াজ। ১৪ ওভারে শামসুর ও নাজিবউল্লাহকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন রাব্বী। খুলনা এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি। মুশফিককে নিয়ে ভরসা থাকলেও ১৫ বলে ২১ করে ফিরেন তিনি। খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন শামসুর রহমান। ২৬ বলে ৩৭ করেন রুশো। ১৫ বলে ২১ করেন মুশফিক। ইরফান, আন্দ্রে রাসেল ও রাব্বি যথাক্রমে ১৮, ৩২ ও ২৯ রান খরচায় দু’টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ ও মোহাম্মন নেওয়াজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইরফান শুক্কুরের হাফ সেঞ্চুরি এবং নওয়াজ ও রাসেলের ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭০ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী রয়্যালস। ১৫ ওভার শেষে রাজশাহীর স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১০০ রান। শেষ ৫ ওভারে বিনা উইকেটে ৭০ রান করে তারা। ওয়ানডাউনে নেমে ৩৫ বলে ৫২ করে আউট হন ইরফান শুক্কুর। ১৬ বলে ২৭ করে অপরাজিত থাকেন রাসেল। ২০ বলে ৪১ করে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ নওয়াজ। খুলনার বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ আমির দু’টি, ফ্রাইলিঙ্ক একটি ও শহীদুল একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী রয়্যালস ইনিংস : ১৭০/৪ (লিটন ২৫, ইরফান শুক্কুর ৫২, আন্দ্রে রাসেল ২৭*, মোহাম্মদ নওয়াজ ৪১*; মোহাম্মদ আমির ২/৩৫, রবি ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩৩, শহীদুল ইসলাম ১/২৩)।
খুলনা টাইগার্স ইনিংস : ১৪৯/৮ (শামসুর রহমান ৫২, রুশো ৩৭, মুশফিক ২১, মোহাম্মদ ইরফান ২/১৮, আন্দ্রে রাসেল ২/৩২, কামরুল ইসলাম রাব্বী ২/২৯)।
ফল : রাজশাহী রয়্যালস ২১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।
টুর্নামেন্ট সেরা : আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।
ফাইনালে দর্শকের ঢল : এদিকে অবশেষে দর্শকখরা কাটল। এবারের মতো দর্শক নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি আগের আসরগুলোতে। শুরুতে ঢাকা পর্বে গ্যালারিতে ছিল বিদীর্ণ। চট্টগ্রাম পর্বে অবশ্য ঢাকার মতো হয়নি। টইটম্বুর না হলেও দর্শক হয়েছে। ফের ঢাকায় ফিরেছিল বিপিএল। আশানুরূপ দর্শক হয়নি। তবে সিলেট পর্বে খরা কেটেছে। স্বাগতিক সিলেট বাদ পড়ে যাওয়ায় কিছুটা ভাটা থাকলেও ঢাকার চেয়ে বেশি দর্শক হয়েছে। আবার ঢাকায় ফিরে এলিমেনিটর ও কোয়ালিফায়ারে দর্শক পেয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। নানারকম ক্ষোভ, দুঃখ, অভিমান থেকে খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে যাননি দর্শকরা। তবে সবকিছুর অবসান হয়েছে ফাইনালে। মিলেছে চোখের প্রশান্তি।
জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস। মিরপুরের গ্যালারি আজ ভরে উঠেছে দর্শকে। গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। আয়োজকদের হিসাব মতে, ২৫ হাজারের বেশি দর্শক ফাইনাল দেখছেন। ফাইনালকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ সত্যিই বিস্ময় জাগানিয়া। কেননা পুরো টুর্নামেন্টের বেশির ভাগ ম্যাচেই কাউন্টারে বসে অলস সময় পার করেছেন টিকিট বিক্রেতারা। স্টেডিয়ামের গ্যালারিও ছিল ধু-ধু মরুভূমি। শুধু শুক্রবারের ম্যাচগুলোতেই দর্শকের দেখা মিলতো। অন্য দিনগুলোতে একই দৃশ্য, শূন্য গ্যালারি।
দর্শকদের এই ঢল নামায় কালোবাজারিদেরও রমরমা চলছে। গত এক মাস টুর্নামেন্ট চলাকালীন এইসব কালোবাজারির মলিন মুখে টিকিট হাতে ঘুরতে দেখা গেছে। গতকাল দুপুরের আগেই কাউন্টারগুলোতে টিকিট শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কালোবাজারিদের কাছে পাওয়া গেছে ফাইনালের টিকিট। আর সেখানে টিকিটের মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন গুণ। এমনকি বিসিবির দেয়া ভলান্টিয়ার আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে যেন প্রাণ ফিরেছে মিরপুর শেরেবাংলায়।


আরো সংবাদ



premium cement
ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

সকল