২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সরকার সশস্ত্রবাহিনীকে সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করতে কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসির ডিফেন্স কোর্সের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন হ বাসস -

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সশস্ত্রবাহিনীকে পরিবর্তিত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে সক্ষম একটি আধুনিক, পেশাদার এবং সুদক্ষ বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ আলোকে একটি আধুনিক, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্রবাহিনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ২০১৯ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি কোর্স) ২০১৯-এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নতুন নতুন অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে সেনানিবাসও গড়ে তুলেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ আমরা একটা পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে চাই।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যাচ্ছে এবং সে ক্ষেত্রেও আমাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হচ্ছে। আবার শান্তিরক্ষী মিশনে গিয়ে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চলতে পারে, যুদ্ধ সরঞ্জামের সাথে যেন তাদের পরিচিতি থাকে এবং তারা যেন যেকোনো ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনে কোনো ধরনের দ্বিধাগ্রস্ত না হন সে জন্য প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়ে আমরা সচেতন। যতদূর সম্ভব সীমিত সম্পদের মধ্যেও সরকার তার জোগান দিয়ে যাচ্ছে, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় এটা মনে করি প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি মানুষের মাঝেই এ চিন্তাটা থাকা উচিত। দেশ মাতৃকার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেই আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা এখানে এসেছেন।’
এই দেশ আপনাদের এবং আমাদের সকলের- এই চিন্তা থেকেই এ দেশকে আমরা আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাবো, বলেন তিনি।
তিনি এ সময় প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের সদস্যবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা অন্যান্য দেশ থেকে এসেছেন তারা পরবর্তীতে নিজ নিজ দেশের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন। আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই হবেন আমাদের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর। কারণ আপনারা একটি বছর এখানে থেকে বাংলাদেশকে চিনেছেন, জেনেছেন, সকলের সাথে মিশেছেন এবং আপনারা দেখেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণভাবে খুব আন্তরিক এবং বন্ধুসুলভ। কাজেই আপনারা আমাদের শুভবার্তা নিয়ে যাবেন নিজ দেশে।’ তিনি কলেজের কমান্ড্যান্ট, সকল ফ্যাকাল্টি সদস্য, রিসোর্স পারসনস ও স্টাফ অফিসারদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ মামুন খালেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।
প্রায় ৮৫ জন সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন এবং বিদেশী সামরিক কর্মকর্তারা এনডিসি কোস ২০১৯-এ এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৮ জন কর্মকর্তা এএফডব্লিউসি কোর্স ২০১৯ অংশগ্রহণ করেন।
১৬টি দেশের সামরিক কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে চীন, মিসর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, যুক্তরাজ্য, মালি এবং নাইজার।
জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিনবাহিনী প্রধান, মুখ্য সচিব, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অধ্যাপক, বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং মিলিটারি অ্যাটাচিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement