শিলংয়ে লাঠিচার্জ দিল্লিতে সংঘর্ষ, উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ ভারতের নাগরিকত্ব আইন
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএবি) বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন শহরে তুমুল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মধ্যে উত্তর-পূর্বের রাজ্য মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। শুক্রবার দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রেল অবরোধ ও ভাঙচুর হয়ছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর কাছে শান্তির আবেদন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজারের।
গত বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়া আসাম এখনো অশান্ত বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সিএবির বিরুদ্ধে উত্তাল ভারতের উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে কর্তৃপক্ষ মেঘালয়ে ১২ ঘণ্টার জন্য কারফিউ তুলে নিলে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা রাজ্য ভবনের কাছে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়লে সংঘর্ষ বেধে যায় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
মোবাইলে তোলা ভিডিওতে পুলিশের লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসে আহত কয়েকজনকে শিলংয়ের সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সিএবির প্রতিবাদে শুক্রবার দিল্লিতে পার্লামেন্ট ভবন অভিমুখে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে তারা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে বাইরে বের হতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষে গণমাধ্যমকর্মীরাও আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ পরে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটকের খবর নিশ্চিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় বড় জমায়েতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আসামে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত তিনজনের নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে গণমাধ্যমগুলো।
উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ : গতকাল সকাল থেকে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ দেখানো হয় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। ফলে কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে সমস্যা অনেক বেশি তৈরি হয়েছে, উলুবেড়িয়া, খড়দহ, ডায়মন্ড হারবার এবং মুর্শিদাবাদে। সেখানে রেল অবরোধ, স্টেশনে ভাঙচুর হয়েছে। উলুবেড়িয়াতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। সব স্টেশন খালি করে দেয়া হয়েছে। যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে সড়কপথে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে নিমদীঘির নরেন্দ্র মোড় এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয়রা। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তারা। পোড়ানো হয় কুশপুত্তলিকা। বাগনানেও তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। লাইব্রেরি মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় অনেকেই। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে অবরোধ।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গাতেও আরপিএফ কর্মীদের মারধর করা, কেবিনম্যানকে পেটানো থেকে আগুনও লাগানো হয় স্টেশনে। ডায়মন্ড হারবার শাখার বাসুলডাঙাতেও এবং বারুইপুর-ডায়মন্ড হারবার শাখায় রেল অবরোধ করেন সিএবি আইন বিরোধীরা।
এর আগে ২০ ডিসেম্বর এনআরসি এবং সিএবি নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল দিঘায় চলতি শিল্প সম্মলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, শুরু থেকেই সিএবি, এনআরসির বিরোধিতা করছে তৃণমূল সরকার, আগামী দিনেও তা করবে। এদিন ফের একবার কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই রাজ্যে এনআরসি করতে তিনি এবং তার দল দেবেন না। রাজ্যের মানুষকে মমতা বলেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই, যেমন শান্তিতে আছেন তেমনই থাকবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা