২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

রুম্পার প্রেমিক সৈকত রিমান্ডে

-

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার প্রেমিক সৈকতকে গ্রেফতার দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত সবকিছু শুনে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ সৈকতের কাছ থেকেই রুম্পার মৃত্যুর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। এর শনিবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে আবদুর রহমান সৈকতকে জিজ্ঞাসাবাদের আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সৈকত স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর সাবেক শিক্ষার্থী। পরে তিনি চলে যান আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। সৈকত একজন ‘প্লে বয়’। ‘গ্রুপ সেক্স’ তার অন্যতম নেশা। অনেক মেয়ের সাথেই তার সম্পর্ক ছিল। তবে কারো সাথেই সম্পর্ক বেশি দিন টিকিয়ে রাখেননি। গত তিন-চার মাস আগে রুম্পাকেও সম্পর্ক আর রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন সৈকত। এই নিয়ে রুম্পা প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পড়েন। সৈকতের প্রতি খুবই দুর্বল ছিলেন তিনি।
সূত্র আরো জানায়, রুম্পার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন সুলতানা। রুম্পার মৃত্যুর ঘটনাস্থলের পাশের একটি ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন সুলতানা। রুম্পা সৈকতের বিষয়সহ অনেক কিছুই সুলতানার কাছে শেয়ার করতেন। ঘটনার দিন বিকেলেও এ বিষয়ে আলোচনার জন্য সুলতানার বাসায় গিয়েছিলেন রুম্পা। ঘটনার দিন দুপুরে সম্পর্ক রাখার জন্য সৈকতকে অনুরোধ করে সুলতানা। কিন্তু সৈকত সেখানেও না করে দেন। এতে একেবারেই মুষড়ে যান রুম্পা।
এ দিকে গতকাল সৈকতকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার আইও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। অপর দিকে সৈকতের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত বুধবার রাত পৌনে ১১টায় সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওই ছাত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে জায়গায় এ ঘটনা, তার আশপাশে বেশ কিছু ছেলে ও মেয়েদের হোস্টেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন হবিগঞ্জ এলাকায় পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায় হলেও বর্তমানে রাজধানীর মালিবাগ শান্তিবাগ এলাকায় থাকতেন।
আলটিমেটাম সহপাঠীদের : এ দিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রুম্পা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন রুম্পার সহপাঠীরা। এ সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ না করা হলে রাস্তায় নেমে কঠোর আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তার সহপাঠী বলেন, রুম্পা হত্যার প্রতিবেদন প্রকাশ ও তার বিচারের দাবিতে গত তিন দিন ধরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ও ক্যাম্পাসের ভেতরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। অথচ এখন পর্যন্ত রুম্পা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
সহপাঠীরা গতকালের প্রতিবাদ অবস্থান সমাবেশে বলেন, রুম্পার পরিবার ও আমরা জানতে চাই কিভাবে সে মারা গেছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়টি দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার। তিন দিন পার হয়ে গেলেও সে রহস্য এখনো অজানা। এটি প্রশাসনের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ও নির্লিপ্ততারই প্রমাণ।
রুম্পার সহপাঠীদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল হাসান সুমন বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রুম্পা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন আমরা চাই। না করা হলে রাস্তায় নামতে আমরা বাধ্য হবো। এই সময়ের মধ্যে আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান সমাবেশ অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সব পরীক্ষা চলবে।


আরো সংবাদ



premium cement