২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এক মাসে রফতানি কমেছে ১১ শতাংশ

-

সদ্যবিদায়ী নভেম্বর মাসে দেশের রফতানি আয়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এ মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের মাসেও রফতানি আয় ব্যাপকভাবে কমেছিল। ওই মাসে গত বছরের অক্টোবর মাসের তুলনায় রফতানি আয় কমেছিল ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি খাতে আয় কমেছে সাড়ে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। অন্য দিকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমেছে রফতানি আয়।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাসিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রফতানি আয়ের প্রধান খাতগুলোর মধ্যে প্রতিটি খাতেই আয় কমেছে। গত ৫ মাসে তৈরী পোশাক খাতে এক হাজার ৩০৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম। গত বছর একই সময়ে এই খাতে আয় হয়েছিল এক হাজার ৪১৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আলোচিত সময়ে ওভেন পোশাকে রফতানি আয় কমেছে ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, আর নিট পোশাকে ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অন্য দিকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এই দুই খাতে আয় কমেছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ২০ ও ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
জুলাই-নভেম্বর সময়ে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রফতানি খাতেও আয় ব্যাপকভাবে কমেছে। এ সময়ে খাতটি থেকে ৩৯ কোটি ১০ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ০৩ এবং এবারের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ কম। এ সময়ে প্রাথমিক পণ্য (কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ ইত্যাদি) রফতানি কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশের মতো। তবে এত খারাপ খবরের মধ্যেও একটু আশা জাগানিয়া পারফরম্যান্স দেখিয়েছে একসময়ের সোনালি অঁাঁশ খ্যাত পাট। আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৪০ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকরা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট রফতানি আয়ে পোশাকের অবদান প্রায় ৮৩ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রফতানির উপখাত হিসাব করলে তৈরী পোশাক খাতের অবদান ৮৫ শতাংশে দাঁড়াবে। তাই তৈরী পোশাকের রফতানি কমলে তার প্রভাব পড়ে পুরো রফতানি খাতে। আলোচিত সময়ে তৈরী পোশাক খাতের রফতানি আয়ও কমেছে। অর্থবছরের নভেম্বর শেষে পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৩০৮ কোটি ৮৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম।
বিজিএমইএ নেতারা বলছেন, দেশের রফতানি আয় তৈরী পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ববাজারে বর্তমানে পোশাকের চাহিদা কম। বছরের শুরু থেকেই অর্ডার কমছে। সাথে পণ্যের মূল্যও কমেছে। এ ছাড়া অবকাঠমোগত সমস্যা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন না করা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে রফতানি বাণিজ্যে নি¤œ গতি রয়েছে। রফতানিবাণিজ্য বাড়াতে প্রতিযোগী দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে সরকারের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তা না হলে আগামীতে রফতানি আয় আরো কমে যাবে। পাশাপাশি একক পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণে জোর দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement