২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুড়ে গেছে রাজধানী মার্কেটের অর্ধশত দোকান

রাজধানী সুপার মার্কেটে আগুন নেভানোর চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা : নয়া দিগন্ত -

রাজধানীর টিকাটুলীতে রাজধানী সুপার মার্কেটে গতকাল বুধবার অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধশত দোকান পুড়ে গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুনে কেউ হতাহত হয়নি। তবে এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার উপরে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, সন্ধ্যা সোয়া ৫টায় রাজধানী সুপার মার্কেটের বর্ধিত ভবন নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটের দোতলায় একটি দোকান থেকে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে মার্কেটের দোকান মালিক-কর্মচারী ও ক্রেতারা আতঙ্কে ছোটাছুটি করে বেরিয়ে যান। তবে মার্কেটের দোতলায় আগুন লাগলেও পুরো রাজধানী মার্কেটে আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক শুরু হয়। দু’টি মার্কেট মিলে প্রায় দেড় হাজার দোকানের মালিক-কর্মচারী ও ক্রেতারা হুড়োহুড়ি করে বেরিয়ে যান। ওই মার্কেটের বেশির ভাগ ক্রেতা ছিলেন নারী ও শিশু। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একে একে ২৫টি ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ দিকে রাজধানী সুপার মার্কেটে আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকার শত শত উৎসুক মানুষ সেখানে ভিড় জমান। এ সময় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। এ সময় টিকাটুলীর সায়েদাবাদমুখী রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী শাহ পরান জানান, মার্কেটের দোতলায় তাদের তিনটি দোকান রয়েছে। তারা মহিলাদের যাবতীয় পোশাক বিক্রি করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে তাদের দোকানের পাশে একটি ফোমের দোকান থেকে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো দোতলায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, আগুন লাগার সাথে সাথে মার্কেটের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক গ্যাস দিয়ে আগুন নেভানো শুরু করেন; কিন্তু ধোঁয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলেন না। এ সময় মার্কেটের দোতলায় দোকান মালিক-কর্মচারী ও ক্রেতা মিলে কয়েক শ’ লোক অবস্থান করছিলেন। আগুন আতঙ্কে তারা দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা দোকান ফেলে মার্কেটের বাইরে বের হয়ে যান। শাহ পরান বলেন, মার্কেটের দোতলায় একটি দোকানে শার্টার গেটের লক লাগানোর কাজ চলছিল। সম্ভবত ওয়েল্ডিংয়ের আগুন গিয়ে ওই ফোমের দোকানে পড়ে। আর এতে আগুন ধরে যায়। তিনি জানান, দোতলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৬৩টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে বিভিন্ন গার্মেন্ট মালামাল, শাড়িসহ বিভিন্ন পোশাক পরিচ্ছদ রয়েছে। এ ছাড়া মার্কেটের নিচতলায় ৪০টির বেশি জুয়েলারি দোকান রয়েছে।
ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেন, রাজধানী সুপার মার্কেটে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। পানির ব্যবস্থাও ছিল না। আমরা বিশেষভাবে গাড়িতে করে পানির ব্যবস্থা করেছি। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হই। তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে ৭টার দিকে। এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি অর্ধশত দোকানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা সব পরিষ্কার করে ভেতরে ঢুকব। তারপর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো যাবে।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে দেবাশীষ বর্ধন বলেন, মার্কেটের দোতলা থেকে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের পরই আগুনের সূত্রপাতের প্রকৃত কারণ জানানো যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement