২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
রোহিঙ্গা নির্যাতন

মিয়ানমারের বিচার শুরু ডিসেম্বরে

-

রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিচার শুরু হচ্ছে আগামী মাসে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর মৌখিক শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এই শুনানির ওপর ভিত্তি করে আদালত একটি অন্তর্র্বর্তীকালীন আদেশ দেবেন, যা চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। গত ১১ নভেম্বর ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির পক্ষে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এই মামলা করে গাম্বিয়া।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের মামলা কয়েক বছর চলার কারণে গাম্বিয়া কয়েকটি বিষয়ের জন্য অন্তর্র্বর্তীকালীন রায় প্রার্থনা করেছে।
যেসব বিষয়ের জন্য গাম্বিয়া অন্তর্র্বর্তীকালীন আদেশ চেয়েছে সেগুলো হলো গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমার অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে; মিলিটারি, প্যারামিলিটারি ও বেসামরিক অস্ত্রধারী ব্যক্তি যাতে কোনো ধরনের গণহত্যা সংঘটন না করে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে; মিয়ানমার গণহত্যাসংক্রান্ত কোনো ধরনের প্রমাণ নষ্ট করবে না এবং বর্তমান পরিস্থিতিকে আরো জটিল ও খারাপ করে, এমন কোনো কাজ তারা করবে না।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ডিসেম্বরের ১০ তারিখ গাম্বিয়া প্রথম মৌখিক শুনানি করবে এবং পরের দিন মিয়ানমারের পক্ষ থেকে শুনানি হবে। ১২ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের প্রথম শুনানির যুক্তি খণ্ডন হবে এবং আশা করা হচ্ছে এর এক মাসের মধ্যে আদালত অন্তর্র্বর্তীকালীন আদেশ দেবেন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ওই আদালতের বিচারকের সংখ্যা ১৫ জন এবং প্রত্যেকের উপস্থিতিতে ওই শুনানি হবে। আদালতের অন্তর্র্বর্তীকালীন আদেশের চার মাসের মধ্যে কী পদক্ষেপ নেয়া হলো, তা গাম্বিয়া ও মিয়ানমার উভয়কেই জানাতে হবে বলে তিনি জানান।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও তার দল এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রতিষ্ঠান ফলি হগ। অন্য দিকে, মিয়ানমারের পক্ষে কে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে, সেটি এখনো জানা যায়নি বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক আদালত ইটলসে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমানা বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে লড়েছিল ফলি হগ।
এ দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইনও আগামী ২৩ নভেম্বর ঢাকা ছেড়ে যাবেন। মিয়ানমার দূতাবাসের উপপ্রধানকে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির সরকার।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, যখন কোনো রাষ্ট্রদূত চলে যান, তখন সবার সাথে বিশেষ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে থাকেন। কিন্তু লুইন কারো সাথে দেখা না করেই চলে যাচ্ছেন। এ কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রথাগতভাবে যে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়, সেটি মিয়ানমারের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের জন্য করা হবে না বলে তিনি জানান।
ত্রিপক্ষীয় বৈঠক : গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, তিন দেশ মিলে মাঠপর্যায়ে একটি কমিটি হবে এবং তারা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করবে।
এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক, চীন ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মাত্র একবার বৈঠক করতে পেরেছেন। এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা চীনকে অনুরোধ করেছি তারা যেন পরের বৈঠকে আয়োজন করে। তবে এখন পর্যন্ত তারা কোনো তারিখ ঠিক করতে পারেনি বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement