২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘বাবার লাশ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিক সরকার, আমরা নেবো না’

নিহত দুলাল পাল -

‘বিদেশী’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আটক-শিবিরে বন্দী আসামের এক প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার পরিবার জানিয়েছে, তারা লাশ নিতে চান না।
‘বাবাকে যখন বিদেশী বলেই ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে বাংলাদেশেই পাঠিয়ে দিক লাশ, আমরা নেবো না’, বলছিলেন দুই বছর ধরে আটক থেকে মারা যাওয়া দুলাল পালের ছেলে আশিস। প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশী বলে ঘোষণা করার পরেই ওই ব্যক্তিকে আটক করে তেজপুর জেলের ভেতরে শিবির রয়েছে, সেখানে রাখা হয়েছিল। বিবিসি।
শোনিতপুরের ডেপুটি কমিশনার মানবেন্দ্র প্রতাপ সিং বিবিসিকে জানিয়েছেন, ‘মাসখানেক আগে মি. পাল আটক-শিবিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার মানসিক ব্যাধি ছিলই, এর সাথে যোগ হয় ডায়াবেটিসও। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে তার চিকিৎসা চলছিল। সেখানেই তিনি গত রোববার মারা যান।’ শোনিতপুর জেলার আলিসিঙ্গা-রবারতলার বাসিন্দা দুলাল পাল যে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন, সেটা জানিয়েছে তার পরিবারও। সেই অবস্থাতেই তাকে আটক করে রাখা হয়েছিল ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে। ‘১৯৬৫ সালে জমি কেনার দলিল রয়েছে আমাদের। সেটাই তো প্রমাণ যে আমার বাবা ’৭১-এর আগে এসেছিলেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সেটা মানলেন না। বাবা বা আমাদের ভাইদের কারো নামই এনআরসিতে ওঠে নি’, বলছিলেন আশিস পাল।
মি. পালের মা ঘরেই মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেন, আর তিনি নিজে গ্যারেজে কাজ করেন। জমি আর মায়ের সামান্য সোনার গয়না বিক্রি করে বাবাকে ভারতীয় বলে প্রমাণ করার জন্য মামলা লড়তে হয়েছে তাদের। কোন দিনই তিন-বেলা ভরপেট খেতে পারেন না তারা। ‘কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে আমাদের। এত কিছু করেও বাবাকে ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে পারিনি।’ জীবিত অবস্থায় যখন তাকে বিদেশী বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে আমরা কেন লাশ নেবো? আগে লিখিতভাবে প্রশাসন জানাক যে আমার বাবা ভারতীয় ছিলেন, তবেই দেহ নেবো,’ ক্ষোভ আশিস পালের। এ নিয়ে প্রশাসন পড়েছে এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে।
ডেপুটি কমিশনার মি. সিং বলছিলেন, “তাকে বিদেশী বলে ঘোষণা করেছিল ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। যে কোনও কারণেই হোক তিনি একবারও ভোট দেননি। সে জন্যই তার নাম প্রথমে ‘ডি-ভোটার’ করা হয়েছিল, তারপরে ট্রাইব্যুনালেও তিনি প্রমাণ দিতে পারেননি যে তিনি বিদেশী নন। সে ক্ষেত্রে আমাদের তো করার কিছু নেই। আমরা তো ট্রাইব্যুনালের আদেশ বদলাতে পারি না।”
গত তিন দিন ধরে প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা আশিস পাল আর তার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আইনি সহায়তা, লাশ গুয়াহাটি থেকে শোনিতপুরে নিয়ে আসার ব্যবস্থাসহ নানা সাহায্য করতেও তারা প্রস্তুত বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। একই সাথে কিভাবে আটক অবস্থাতেই মৃত্যু হলো দুলাল পালের, তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ জারি করেছেন শোনিতপুরের ডেপুটি কমিশনার মানবেন্দ্র প্রতাপ সিং।
এখনো দুলাল পালের লাশ গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের মর্গেই রাখা রয়েছে। আর ওই দিকে তার বাড়িতে পরিবার পরিজন হিন্দুশাস্ত্র মতে অশৌচও পালন করতে পারছেন না সৎকার না হওয়ায়। তার ছেলে বলছিলেন, ‘বাবাকে দাহ করা হয়নি, তাই আমরা শুধু ফলটল খেয়ে আছি।’


আরো সংবাদ



premium cement
সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহতের খবরে ঈশ্বরগঞ্জে শোক দুর্যোগে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কেন বাংলাদেশে? জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি

সকল