২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তানকে পানি বন্ধের হুমকি মোদির

-

পাকিস্তানকে ভারত থেকে আর পানি দেয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার এক জনসভায় কথা বলেছেন মোদি। এর আগে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার জেরে দেশটির পানিসম্পদমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি পাকিস্তানে নদীর পানি প্রবাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও গার্ডিয়ান।
ভারতের হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের প্রচারপর্ব শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সেই উপলক্ষেই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র এবং চারখি দাদরিতে আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে রাজ্যের কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী দিনে তার সরকার পাকিস্তানে পানি যাওয়া বন্ধ করে তা ঘুরিয়ে দেবে হরিয়ানার দিকে। মোদি বলেন, ‘৭০ বছর ধরে হরিয়ানার ভাগের পানি পাকিস্তানে বয়ে যেতে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই মোদি এবার পানি পৌঁছে দেবে আপনাদের বাড়িতে। এই নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি আমি। এই পানির ওপর একমাত্র ভারত ও তার কৃষকদের অধিকার রয়েছে। মোদি আপনাদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’এছাড়া কাশ্মির প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন মোদি। জনসভায় উপস্থিত হরিয়ানার বাসিন্দাদের উদ্দেশে মোদি বলেন, সময় এসেছে কংগ্রেসকে উচিত শিক্ষা দেয়ার। ৩৭০ ধারা খারিজ হওয়ার পর কংগ্রেস যেভাবে কাশ্মির নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে, তার ফল এবার তাদের ভুগতে হবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার জেরে দেশটির পানিসম্পদমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি পাকিস্তানে নদীর পানি প্রবাহ বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের ভাগের পানি না দিয়ে তা কাশ্মির ও পাঞ্জাব রাজ্যে ঘুরিয়ে দেয়ার কথা বলেছিলেন ভারতীয় মন্ত্রী। নীতিন গড়কড়ি বিস্তারিত কিছু না জানালেও তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইতোমধ্যেই নেয়া সিদ্ধান্তের কথা পুনরুল্লেখ করেছেন মন্ত্রী। পানি ঘুরিয়ে নিতে গত ডিসেম্বরে একটি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পকে অনুমোদন দিয়েছে ভারতীয় মন্ত্রিসভা।
১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় করাচি শহরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওয়াহেরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের পক্ষে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেন। সিন্ধুর পানি চুক্তি অনুসারে রবি, বিপাশা এবং শতদ্রু নদীর পানির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ভারতের। বিনিময়ে সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলমের মতো পশ্চিম প্রবাহিনী নদীগুলোর পানি পাকিস্তানে বাধাহীনভাবে বয়ে যেতে দিতে হবে। কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার পর সিন্ধুর পানি চুক্তি বাতিল করার দাবি উঠে ভারতে।
তখন এক টুইট বার্তায় ভারতের পানিসম্পদমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি বলেন, আমাদের ভাগের পানির যে প্রবাহ পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত হতো তা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে উচ্চাকাক্সক্ষী সেচ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং উজানে বেশ কয়েকটি বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে ভারত। দিল্লির দাবি, চুক্তি মেনেই উজানের পানি ব্যবহার করছে তারা। ২০১৬ সালে কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর ভারত কয়েকটি বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করলে পাকিস্তানের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এসব বাঁধ প্রকল্পের বেশ কয়েকটি নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে পাকিস্তান। দিল্লির বিরুদ্ধে সিন্ধু পানি চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ইসলামাবাদ জানায়, সিন্ধু নদীর পানির ওপর তাদের ৮০ শতাংশ সেচনির্ভর কৃষি টিকে আছে।


আরো সংবাদ



premium cement