১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে দু’টি রুটে মেট্রোরেল

পূর্বাচল ও হেমায়েতপুরে নতুন সংযোগ
একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : পিআইডি -

চলমান একটি রুটে মেট্রোরেল স্থাপনের কাজ চলছে। এখন নতুন করে আরো দুটি রুটে মেট্রোরেল স্থাপনের কাজ অনুমোদন দিয়েছে সরকার। রুট-১ ও রুট-৫ দুটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। জাইকার ঋণ সহায়তায় এই প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করা হবে। দুটি প্রকল্পের আওতায় রুট-১ বিমানবন্দর-কমলাপুর স্টেশন ও নতুনবাজার-পূর্বাচল ডিপো এবং রুট-৫ হেমায়েতপুর-মিরপুর হয়ে ভাটারা পর্যন্ত মাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমআরটি কোম্পানি কোনো এক সময় দেশের পুঁজিবাজারে যেতে পারে। এখন আমরা তাদেরকে সহায়তা দিচ্ছি। তিনি এ-ও বলেন, এই প্রকল্পের কাজের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য কোনোভাবেই নষ্ট না হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় মেট্রোরেল প্রকল্পটিসহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, ১ লাখ ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে জিওবি থেকে ৩০ হাজার ৪৬৬ কোটি ২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ সহায়তা ৬৯ হাজার ৪৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তথ্যানুযায়ী, মেট্রো রেলের লাইন-১ এর মাধ্যমে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন ও নতুন বাজার টু পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ৩১.২৪১ কিলোমিটার এবং লাইন-৫ মাধ্যমে হেমায়েতপুর-আমিনবাজার-গাবতলী-মিরপুর-১ ও ১০, কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে। এসব রুটের কোথাও পাতাল, আবার কোথাও এলিভেটেড লাইন হবে। এই দু’টি মেট্রোরেল রুট বাস্তবায়নে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মোট ৬৮ হাজার ৫৬৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। এই ঋণে শুধু সুদই দিতে হবে ২ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা।
মেট্রোরেল লাইন-৫ বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এই রুট হলো, হেমায়েতপুর, আমিনবাজার, গাবতলি, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২, নতুনবাজার, ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। এটির নাম দেয়া হয়েছে নর্দান রুট। আগামী ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রুটে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার হবে পাতাল এবং সাড়ে ৬ কিলোমিটার হবে এলিভেটেড। এখানে ১৪টি স্টেশনের মধ্যে ৯টি মাটির নিচে আর ৫টি হবে এলিভেটেড। এখানে কোচ কেনা হবে ১৯৮টি। যেখানে প্রতি সেটে থাকবে ৬টি করে। মেট্রোরেল লাইন-১ বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এই রুট হলো: বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর স্টেশন এবং নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত মোট ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। এখানে পাতাল রেল হবে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার এবং এলিভেটেড ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। এখানে ২০০টি কোচ কেনা হবে। যেখানে প্রতিটি সেটে ৮টি করে কোচ থাকবে। এই অংশে ১৯টি স্টেশনের মধ্যে পাতালে ১২টি এবং এলিভেটেডে ৭টি থাকছে।
অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলোÑ এক হাজার ৪৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনী- নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ৪-লেনে উন্নীতকরণ) প্রকল্প, ডোমার-চিলাহাটি-ডাউলাগঞ্জ (জেড-৫৭০৬), ৪২১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ডোমার (বোড়াগাড়ী)-জলঢাকা (ভাদুরদরগাহ) (জেড-৫৭০৪) এবং জলঢাকা-ভাদুরদরগাহ-ডিমলা (জেড-৫৭০৩) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ৭৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ছয়না-যশোদল-চৌদ্দশত বাজার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, এক হাজার ৭১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এক হাজার ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকাস্থ মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প, ১২৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৫৮০ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ইরিগেশন ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৭০ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পুনঃ বনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

 


আরো সংবাদ



premium cement