২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আবরার হত্যা

আলটিমেটাম বুয়েট শিক্ষার্থীদের

শেরেবাংলা হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ; ভিসির পদত্যাগ চায় বুয়েট অ্যালামনাই ও শিক্ষক সমিতি; নির্যাতন নিয়ে গণতদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব
আবরার হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সমাবেশ। ইনসেটে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ও অভিনেতা আবুল হায়াত : নয়া দিগন্ত -

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা ও অন্যান্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তারা। দাবি আদায়ে বুয়েট প্রশাসনকে সাত দিনের আলটিমেটাম দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন তারা। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়েছে অভিভাবক ও শিক্ষকরাও।
আবরার হত্যার প্রতিবাদের তৃতীয় দিন গতকাল বুধবারেও উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। দুপুরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন শেরেবাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ। ভিসির পদত্যাগ, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতিসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বুয়েট অ্যালামনাই। একই দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। নির্যাতন নিয়ে গণতদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন নিপীড়নবিরোধী অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অন্য দিকে আবরার হত্যার বিচারসহ দেশের স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূর।
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে গতকালও বিক্ষোভ মিছিল করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তারা পলাশী এবং চানখারপুল সংযোগ রাস্তা বন্ধ করে দেন। বিক্ষোভ মিছিলে তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে, ‘শিক্ষা সন্ত্রাস একসঙ্গে চলে না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই খুনিদের ফাঁসি চাই’, ‘ভিসি তুমি নীরব কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খুনিদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। আন্দোলনকারীরা এ সময় তাদের সব দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ সময় তারা ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছেÑ খুনিদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত; বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে তাদেরকে আজীবন বহিষ্কার; আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করা; মামলা ট্রাইব্যুনালের অধীনে নিয়ে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করা; অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ দেয়া; বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা; ঘটনার পর ভিসি কেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি এবং ৩৮ ঘণ্টা পর গিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেয়ায় গতকাল বেলা ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে তার জবাব দেয়া; আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা; এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা; নিরাপত্তার জন্য সব হল উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা বসানো এবং ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করা।
দুপুরে আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দফতরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান। এ সময় শিক্ষার্থীরা কার নির্দেশে ক্যাম্পাসে পুলিশ এলো এবং কার নির্দেশে গেলোÑ এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পলিটিক্যাল স্টুডেন্টদের ক্ষমতা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের কোনো কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজন হলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জানাই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমাদের তেমন একটা সখ্য নাই, যতটা পলিটিক্যাল ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে রয়েছে।
আন্দোলনে অবরুদ্ধ সড়ক : শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকালে বুয়েট ক্যাম্পাসের নিকটবর্তী পলাশী মোড়, বকশিবাজার, শহীদ মিনার এলাকার সব সড়ক বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পলাশী মোড়ে সবাই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বুয়েটের আশপাশের এসব সড়ক বন্ধ করে দেয়ায় ওই এলাকা দিয়ে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।
শেরেবাংলা হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ : শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়া এবং সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে নাটক করায় শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের ক্ষোভে পড়েন শেরেবাংলা হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল খান। গতকাল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও ক্রমাগত চাপে পদত্যাগ করেন তিনি। বেলা ৩টার দিকে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে মাসুদ সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকদের মতামত তুলে ধরে তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হলের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের দোকান বন্ধ, বিভিন্ন টর্চার সেল বন্ধ, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের প্রভাব বন্ধ, বহিরাগত ছাত্রদের হলে প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে। একইসাথে আমরা আগে এগুলো যে নিষিদ্ধ করতে পারিনি সেই দায় নেন শিক্ষকেরা।
ভিসির পদত্যাগসহ সাত দাবি বুয়েট অ্যালামনাইয়ের : আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাসে এক সমাবেশ করে বুয়েট অ্যালামনাই। এ সময় বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি (ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী) নিষিদ্ধসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।
বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এই সাত দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলোতে রয়েছেÑ হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে বিশেষ বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ে বিচার; জড়িত সব ছাত্রকে অবিলম্বে বুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার; বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গ সংগঠনভিত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা; বুয়েট প্রশাসনকে ঐতিহ্য পরিপন্থী যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও প্রভাব মুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; অতীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের তদন্ত, বিচার ও শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে ভিসিসহ বুয়েট প্রশাসনের ধারাবাহিক অবহেলা ও ব্যর্থতা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে মদদ জুগিয়েছে। অবিলম্বে ভিসির অপসারণসহ প্রশাসনের আমূল পরিবর্তন করে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান অতীতের মতো সমুন্নত রাখতে সুযোগ্য, নির্ভীক ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের পদায়ন করা; র্যাগিং ও অন্যান্য অজুহাতে ছাত্রছাত্রী নির্যাতন নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, আবরার হত্যাসহ ইতঃপূর্বে সংঘটিত অন্যান্য ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার অসম্পূর্ণ বিচার কার্য অবিলম্বে সম্পন্ন করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করা।
বুয়েটের ৩০০ শিক্ষকও ভিসির পদত্যাগ চান : আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বুয়েট শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের যে দাবি তুলেছেন, তার সাথে একমত প্রকাশ করেছেন শিক্ষক সমিতির ৩০০ সদস্য। একইসাথে তারা বুয়েট থেকে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ চান বলে জানান।
চলমান আন্দোলনে বুধবার দিনের শেষ ভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুম বলেন, আমরা হত্যার ঘটনায় দায়িত্বজ্ঞানহীনতার যথেষ্ট প্রমাণ পেথয়েথছি। আমরা শিক্ষক সমিতির ৩০০ সদস্য সকাথলে বসেছিলাম। তারা সবাই ভিসির পদত্যাগ দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন। তিথনি পদত্যাগ না করথলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাথসিনা যাথতে ওনাথকে অপসারণ কথরেন সে দাবির সাথেও আমরা একমত। তিনি বলেন, ছাত্রদের দাবিগুলোর সাথে আমরা একমত। ভিসি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। আজথকের ঘটনা তার ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ। তাথতে আমরা ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ডক্টর মিজানুর রহমান আবরার হত্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা পাইনি। সেদিন আবরাথরের লাশ সরানোর জন্য হত্যাকারীদের পক্ষ থেকে আমাকে চাপ দেয়া হয়েছে। আমি বলেছি, ছেলেটি যেহেতু মারা গেছে, ফলে এটি পুলিশ কেইস। আমি এই লাশ সরাথতে পারব না।
গণতদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক-অভিভাবকদের : বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতনের বিষয়ে গণতদন্ত কমিশন গঠন করে রিপোর্ট প্রকাশ করার প্রস্তাব দিয়েছে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক-অভিভাবকেরা। গতকাল দুপুরে ঢাবি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে নিপীড়নবিরোধী অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নির্যাতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী আমাকে তদন্ত কমিটি গঠন করে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরার কথা বলেছে। কিন্তু আমি ঘোষণা করতে চাইÑ শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, পাশাপাশি এ কমিটিতে শিক্ষকেরাও অংশ নেবেন। কমিটি নির্যাতনের চিত্র সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরবে।
সমাবেশে ঢাবি অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, আমরা সবাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেস্টরুম-গণরুমের কথা জানি। বুয়েটে প্রায় প্রতি রাতেই কাউকে না কাউকে টর্চার সেলে অত্যাচার করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও একই অবস্থা। আমরা জানি, এই সমাবেশের পর গণরুম-গেস্টরুম বন্ধ হবে না। ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টর বিন্দুমাত্র বিচলিত হবেন না। তারা সরকারের কথা অনুযায়ীই চলবেন।
দেশবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবি ডাকসু ভিপির : ফাহাদ হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাবি ক্যাম্পাসে কালো পতাকা মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল পরবর্তী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমানে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনই নয়, দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের দলকানা প্রশাসন দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। মানুষকে কোনো কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। যখনই ছাত্ররা টুকটাক কথা বলছেন, তখনই এটা স্বৈরাচারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষভাবে গড়ে তুলতে হবে। বুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কোনোভাবেই আন্দোলন বন্ধ করবেন না। এ ধরনের আন্দোলনের ক্ষেত্রে অতীতে দেখা গেছে, প্রশাসন মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। পরে আর কোনো ফলাফল পাওয়া যায় না। আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা সবসময় আপনাদের সাথে আছি।
ডাকসুর ভিপি বলেন, সরকার দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করে যাচ্ছে। নইলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তিনি বলেন, এসব দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে।
বিচার দাবি আবরারের সহপাঠী ও শিক্ষকদের : আবরার হত্যার প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বুয়েট ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছেন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগে আবরারের শিক্ষক ও সহপাঠীরা। সকাল ১০টায় মৌন মিছিল শেষে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের দাবি জানান।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ : আবরার হত্যার বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে যায় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। গতকাল মধুর ক্যান্টিন থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নেতৃত্ব দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজন, ছাত্রমৈত্রীর ইকবাল কবীর প্রমুখ।
রাবি সংবাদদাতা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাবি’ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে গুরুত্বপূর্র্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পূর্বের স্থানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে গণস্বাক্ষর ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তারা। এদিকে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদল। মিছিলটি রুয়েটের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে রাবির কাজলা গেট এলাকায় এসে শেষ হয়।
জাবি সংবাদদাতা জানান, দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে প্রধান গেইটের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে অমর একুশ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মিছিল-পরবর্তী একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জবি সংবাদদাতা জানান, দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ১১টায় বিশ^বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৯ বছরে বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে আমরা কোনোটিরই পূর্ণাঙ্গ বিচার পাইনি। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় নটরডেমিয়ান সোসাইটি অব জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে। দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নুর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি ড. মীজানুর রহমান। এর আগে সকাল ৯টায় বিক্ষোভ মিছিল করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলের শেষে শাখা ছাত্রলীগের ধাওয়ায় পাঁচজন আহত হন। এরপর বেলা ১টায় আবরার হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও পথনাট্য ‘অবয়ব’ প্রদর্শন করে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় রঙ্গভূমি।
সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিল বের করে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। গতকাল দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রিকাবীবাজার গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা আবরার ফাহাদ হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ময়মনসিংহ দক্ষিণ ও উত্তর জেলা শাখা। সকালে নগরীর ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নতুনবাজারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। একই দাবিতে দুপুরে জিলা স্কুল মোড় থেকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের একটি মিছিল নতুনবাজার হয়ে বাউন্ডারিরোড মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
বগুড়া অফিস জানায়, সারাদেশের মতো বগুড়াতেও বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বুধবার দুপুরে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অবিলম্বে আবরার হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। মানববন্ধন চলাকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস সেখানে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। একই ইস্যুতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট, জাসদ ছাত্রলীগও।
লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা জানান, লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রদল। নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার সকালে পৌর শহরের চকবাজার মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহীম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্যাহ আল মামুন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুর রহিম রাজন, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ান হোসেন আকবর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবির আহম্মেদ রাজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা আবরার হত্যার তীব্র ঘৃণা, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী ছাত্র, জনতা ও ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টারসের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শত শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ সব পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান।
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, আবরার হত্যার প্রতিবাদে গতকাল সকালে শহরের কলাবাগান মোড় থেকে জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এইচএসএস সড়কের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির সদস্যসচিব এম এ মজিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক ছোট মজিদ, জেলা ছাত্রদলের মুশফিকুর রহমান মানিকসহ অন্য নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, আবরার হত্যাকারীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পাবনায় বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। গতকাল দুপুরে শহরের বাংলাদেশ ঈদগাহ মাঠ থেকে এক মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে পথসভায় মিলিত হয়। এতে বক্তব্য দেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, পাবিপ্রবি শাখা ছাত্র দলের সাংগঠনিক সম্পাদক একরামুল হক লিমন, এডওয়ার্ড কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ইফতেহাদুল হাসান সাগর প্রমুখ।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রদল। গতকাল সকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মারুফ পারভেজ প্রিন্স, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আযম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুস সালাম বাবলা প্রমুখ।
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠি জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শহরের সদর চৌমাথা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কাপুড়িয়া পট্টি ঘুরে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাধনার চৌমাথায় গিয়ে শেষ হয়। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: আরিফুর রহমান খানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা আবরার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
ভোলা সংবাদদাতা জানান, ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গতকাল বুধবার বেলা ১১টা ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরামের চেয়ারম্যান সোলায়মান মামুনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ও দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ মু. শতকাত হোসেন, উপদেষ্টা তরিকুল ইসলাম কায়েদ, সদস্য জাকির হোসেন সবুজ, অর্থ-সম্পাদক নূর নবী হাওলাদার মনির, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ, নবীর হাসান, মো: হারুন, আবদুল গনি, মো: মুন্না প্রমুখ। এ সময় বক্তরা এই হত্যার সাথে জড়িতদের অন্যতম অমিত সাহাকে মামলার এজাহার ভুক্তকরণসহ প্রশাসনের কাছে ছয়টি দাবি উপস্থাপন করেন।
এ দিকে ফাহাদ হত্যা বিচারের দাবিতে ভোলা সদর রোডের কে জাহান মার্কেটের সামনে মানববন্ধন করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ভোলা জেলা শাখা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ইশা ছাত্র আন্দোলন ভোলা জেলার (উত্তর) সভাপতি মু. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদল গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ রোড ঘুরে সাহিত্য পরিষদ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আবরার খুন হয়েছে শুধু ভারত পানি নিয়ে যাবে তার বিরোধিতা করার কারণে। মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে খুন করেছে। সরকার এই সন্ত্রাসীদের বিচার না করার কারণেই তারা আজকে এমন কাজ করে আসছে।
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করতে চাইলে খামারখালী সড়কের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। পরে সেখানেই প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। অপর দিকে জেলা ছাত্রদলের আরেকটি অংশ শহরের কাজির পয়েন্ট এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উকিলপাড়া মোড়ে আসার পর পুলিশি বাধার মুখে পড়ে এবং সেখানেই সমাবেশ করে।
ফেনী সংবাদদাতা জানান, ফেনী শহরে গতকাল বুধবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলনের নেতৃত্বে মিছিলে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শহরের আদালত পাড়া থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শান্তি কোম্পানি সড়কে গিয়ে তা শেষ হয়।
এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন ফেনী জেলা কমিটির সভা গতকাল বুধবার বিকেলে শহরের অস্থায়ী কার্যালয়ে কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট লক্ষণ বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা আবরারের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এতে জড়িতদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা জানান, সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়। উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেন। এ সময় বক্তারা আবরারের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, গতকাল বুধবার সচেতন ছাত্র সমাজ, সাভারের ব্যানারে মানববন্ধন ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। সাভার সরকারি কলেজের ছাত্র সোহেলের নেতৃত্বে বেলা ১১টার সময় বাসস্ট্যান্ডের সাভার সিটি সেন্টারের সামনে মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসির পদত্যাগ ও সব বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের আটক করে বিচারের দাবি করে তিন দফা দাবি পেশ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement