২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকল্পের জন্য পণ্য ক্রয়ে সতর্ক থাকার তাগিদ

ড. কালাম স্মৃতি পদকে ভূষিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন পরিকল্পনামন্ত্রী হ বাসস -

প্রকল্পের পণ্য ক্রয়ে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এ তাগিদ দেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক দাম নির্ধারণের সংবাদ আমাদের বিব্রত করেছে। একনেক বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্পের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে উচ্চমূল্য নির্ধারণের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনলে তিনি এ তাগিদ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সচিব মো: নুরুল আমীন, সিনিয়র সচিব ও সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলমসহ অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার অহেতুক সমালোচিত হতে চায় না। আমরা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সচিবদের পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সাবধান হতে নির্দেশ দিয়েছি। জানা মতে এ রকম কাজ আর হবে না। তিনি বলেন, প্রকল্পের যেকোনো পণ্যের দাম বাজার যাচাই করে নির্ধারণ করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, সংশোধন করতে হলে প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই তা করতে হবে। কিন্তু শেষ হওয়ার পর যেন সংশোধনীর জন্য না আসে সে নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া সড়ক-মহাসড়ক করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সড়ক করতে গিয়ে গরিব মানুষের বাড়িঘর যাতে ভেঙে ফেলা না হয় সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন করে হলেও অন্যপাশ দিয়ে রাস্তা ঘুরিয়ে নিতে হবে। তারপরও বাধ্য হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ভাঙতে হলে তাদের উদারভাবে এবং দেরি না করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলাদেশে ২৮ কিলোমিটার যে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে সেটি দিয়ে শুধু যে বিদ্যুৎ আমদানি হবে তা নয়, ভবিষ্যতে হয়তো আমরা রফতানিও করতে পারব। সরকারের প্রকল্প তদারকি সংস্থা আইএমইডিকে শক্তিশালী করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে; যা বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৯৬৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি খাত থেকে জোগান দেয়া হবে ৮ হাজার ৯৫২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ৮৫৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-ফুলপুর-নকলা-শেরপুর (আর-৩৭১) আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন, ৩২৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়কের বিন্দুর মোড় হতে বিমানবন্দর হয়ে নওহাটা ব্রিজ পর্যন্ত পেভমেন্ট ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ১২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় হতে সোনাদীঘি মোড় এবং মালোপাড়া মোড় হতে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন, ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ-২ শীর্ষক প্রকল্প, ১৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রকল্প, ৬৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্ট্রেংদেনিং মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন ক্যাপাবিলিটিজ অব আইএমইডি (এসএমইসিআই) প্রকল্প; ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভারতের ঝাড়খণ্ড হতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি করার লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর থেকে মনাকষা সীমান্ত পর্যন্ত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রকল্প এবং দুই হাজার ৯৬৮ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিভাগীয় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প।


আরো সংবাদ



premium cement