২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
চীনা প্রতিনিধিদলকে রোহিঙ্গা নেতারা

নাগরিকত্ব দিলে ফিরতে রাজি

উখিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল
-

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দু’টি প্রতিনিধিদল। গতকাল রোববার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে পৌঁছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি। তাদের সাথে রয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার। অন্য দিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান চীনের প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধিদলটি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যান বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তের শূন্য রেখায়। চীনা প্রতিনিধিদলটি তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ডে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন।
কয়েক দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার ব্যাপারে অনাগ্রহের কারণ জানতে চান চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এ সময় রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের প্রতি তাদের অবিশ্বাস ও অনাস্থার কথা জানান। স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেছেন, ‘মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। এর আগেও তারা অনেকবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। তাই সরাসরি নাগরিকত্ব ও সহায় সম্বল ফেরত দিলেই আমরা ফিরতে পারি।’ দিল মোহাম্মদ আরো বলেন, আরসা বা অন্য এনজিও সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরতে অনুৎসাহিত করছে কি না তা জানতে চেয়েছেন চীনের প্রতিনিধিরা। জবাবে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারে ফেরত যেতে কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে এখনই চলে যেতে প্রস্তুত সবাই। জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, তুমব্র“ খালের কাছে শূন্যরেখায় প্রায় এক হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার রয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের অন্য ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাগরিক সুবিধা থাকলেও এখানে কিছুই নেই। রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেড় শ’র মতো এনজিও কাজ করলেও এ দিকে কারো নজর নেই। তবে জাতিসঙ্ঘের খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) আওতায় ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) প্রতি মাসে দু’বার করে নো ম্যানস ল্যান্ডে ত্রাণ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিনিধিদল দু’টি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গা নেতৃবৃন্দ, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করার কথা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসঙ্ঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এ দিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো একজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকার কথা বলে তারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর এই বছরের ২২ আগস্ট থেকে তিন হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সাক্ষাৎকারের সময় তারা প্রত্যাবাসনের জন্য নানা শর্ত জুড়ে দেয়ায় প্রত্যাবাসন হয়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশের লক্ষ্য সিরিজে সমতা কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন

সকল