২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৈনিক বেতনে চালক নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

-

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে একটি কোম্পানির অধীনে গণপরিবহনে মাসিক বেতনেরভিত্তিতে চালক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ট্রিপ ও দৈনিকভিত্তিতে চালক নিয়োগ বন্ধের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। ছয় মাসের মধ্যে আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে নিহত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হাসানের ক্ষতিপূরণ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো: খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর গতকাল রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
রায়ে বলা হয়, বাস কোম্পানি ও চালকদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা দূর করতে বিদ্যমান সব বাস কোম্পানিকে একটি কোম্পানির অধীনে আনতে হবে। সব মহানগরে জোন বা লাইনভিত্তিক বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজ করতে হবে। যেখানে সব গাড়িকে একটি কোম্পানির অধীনে নিয়ে একেকটি রুটের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রঙের বাস সার্ভিস চালু করবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার সময় চালকদের দৃষ্টিশক্তি ও ডোপ টেস্ট করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিআরটিএকে।
পাশাপাশি মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের প্রতিটি ক্রসিংয়ে ও বাস স্টপেজে চালকরা বেপরোয়াভাবে গণপরিবহন চালাচ্ছে কি না তা নজরদারি করতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে বলেও রায়ে বলা হয়েছে। এ ছাড়া রায়ে যত্রতত্র বাসে যাত্রী না তোলা, চলন্ত অবস্থায় বাসের দরজা বন্ধ রাখা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল বা সংরক্ষিত ও আবাসিক এলাকার সামনে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহনের হর্ন না বাজাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বিবাদিদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর নিহত রাজীবের দুই ভাইকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাইকোর্টের রায়ে।
রায়ে আরো বলা হয়, বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুটি বাসের চালকের বেপরোয়ার কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। হালকা যান চালনার লাইসেন্স থাকার পরও তারা ভারী যান চালাচ্ছিল। তাদেরকে এ ভারী যান চালনার অনুমতি দিয়েছিল বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই দুর্ঘটনার দায় কোনোভাবেই দুটি পরিবহন কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না।
গত বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের রেষারেষিতে শরীর থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজীবের। মাথায় আঘাত পান তিনি। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ এপ্রিল মারা যান রাজীব। এ ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। ওই রিটের ওপর গত ২০ জুন রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।


আরো সংবাদ



premium cement