বিদেশে যেতে ইচ্ছুকরা যেন প্রতারিত না হন : প্রধানমন্ত্রী
- বাসস
- ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে যাওয়ার সময় সাধারণ জনগণ যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচারণা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা বন্ধে আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে এবং একই সাথে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। কেননা তারা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন।’
শেখ হাসিনা গতকাল সকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬-এর আলোকে গঠিত অভিবাসনবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন অকালে হারিয়ে না যায় সেজন্য তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। কেননা তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের দিকে নজর দেয়া আমাদের দায়িত্ব, যেহেতু তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে, যা আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। যারা কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে তাদের জীবনবৃত্তান্তসহ একটি ডাটাবেজ প্রস্তুত করার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে তারা কোন কাজের জন্য কোন দেশে যাচ্ছে তার বিবরণ থাকতে হবে।’
বিদেশে গমনেচ্ছুরা যে কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছে তার প্রশিক্ষণ এবং সে দেশের ভাষার ওপর দখল থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যৌথভাবেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারি, যেমনটি অতীতেও করা হয়েছে।
অভিবাসনবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এক শ্রেণীর দালাল ও প্রতারক চক্র রয়েছে, যারা বিপুল অর্থের বিনিময়ে বিদেশে লোক পাঠায়। আর বিদেশে গমনেচ্ছুরা দিন বদলের আশায় তাদের সর্বস্ব বিক্রি করে, ঋণ করে তাদের টাকার জোগান দেয়। এমনও দেখা গেছে যে, এদের বিদেশে নিয়ে দালাল চক্র দেশে থাকা তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকেও চাপ প্রয়োগ করে অর্থ আদায় করে। কাজেই আমাদের এই পুরো প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে নজরদারিতে আনতে হবে।
সারা দেশে তার সরকার ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের পরও জনগণ এসব প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে গমনেচ্ছুরা চাইলে সারা দেশে থাকা এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে বিদেশে যাওয়ার জন্য নাম রেজিস্টার করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদেশে গমনেচ্ছু জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, তারা দালালের কাছে না গিয়ে বিদেশ যেতে চাইলে এসব ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে যেন নাম রেজিস্ট্রেশন করান।’ তিনি এ বিষয়ে মিডিয়াকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মহিলারাও কাজের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে এবং বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কাজেই আমরা এখন তাদের জন্য স্মার্ট কার্ড ও মোবাইল ফোন দিচ্ছি, যাতে তারা এ ধরনের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পারে। তার সরকার বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা বিদেশে যেতে পারেন।
‘আমাদের একটি বৃহৎ কর্মক্ষম যুবশক্তি আছে, যাদের মধ্যে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে এবং এখন থেকে আমরা দক্ষ জনশক্তিই বিদেশে পাঠাব।
এ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান আরো বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা আর কেবল জনশক্তি বিদেশে পাঠাব না, কেননা আমাদেরই দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন পড়বে। কারণ দেশজুড়ে আমরা এক শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি এবং আইসিটি ক্ষেত্রের বিকাশ সাধন করছি।’
অভিবাসনবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো: মাহবুব আলী বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান সভাটি সঞ্চালনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো: আবুল কালাম আজাদ এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিমও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা