২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আবারো আটকে গেল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

প্রত্যাবাসনবিরোধী এনজিওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: আবুল কালাম সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন : নয়া দিগন্ত -

রোহিঙ্গাদের দেয়া শর্ত পূরণ না হওয়ায় তালিকাভুক্ত কোনো রোহিঙ্গাই স্বদেশে ফিরতে রাজি হননি। নাগরিকত্বসহ পাঁচটি শর্ত না মানলে রোহিঙ্গারা কিছুতেই মিয়ানমারে ফিরতে নারাজ। এ কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। এ নিয়ে পরপর দুইবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আটকে গেল। অবশ্য হতাশ না হয়ে চলমান এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য গতকাল দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছিল। এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প, কেরণতলী ট্রানজিট ক্যাম্প ও নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল বাস, ট্রাক ও অন্যান্য সব সুবিধা। প্রত্যাবাসনের জন্য নেয়া হয়েছিল নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু কোনো রোহিঙ্গা মিয়ানমারে যেতে রাজি হননি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের বহনের জন্য পাঁচটি বাস ও তিনটি ট্রাক অবস্থান করলেও কেউ যেতে রাজি না হওয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো পেছাল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।
গতকাল দুপুর পর্যন্ত ২৯০ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, সাক্ষাৎকার দেয়া রোহিঙ্গাদের কেউই মিয়ানমারে যাবেন না বলে জানিয়েছেন। যাদের গতকাল স্বদেশে ফেরত যাওয়ার কথা ছিল।
যদি কোনো রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরতে রাজি হন তাদের প্রত্যাবাসন করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মিয়ানমার থেকে ছাড়পত্র পাওয়া ৩৪৫০ জনের মধ্যে গত তিন দিনে প্রায় ২৯০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের দফতর। তবে এই সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। পর্যায়ক্রমে তালিকায় থাকা সব রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হবে। তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা ফিরে যাওয়ার জন্য রাজি হবেন তাদের প্রত্যাবাসন করা হবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
সংবাদ সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধি ঝেং তিয়ানঝু বলেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় মধ্যস্থতার দায়িত্ব তার দেশ নিয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নÑ রোহিঙ্গারা কেন নিজ দেশে ফিরতে চায় না? কেন তারা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর আস্থা পায় না? সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মিয়ানমারের কূটনীতিকদের কাছে বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা এই প্রশ্নগুলো বার বার তুলে ধরলেও তারা কোনো জবাব দেননি।
জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এবং বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধিদের কাছে মতামত দিয়েছে প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা ২৯০ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য মিয়ানমার দূতাবাসের প্রতিনিধি এবং ঢাকার চীনা দূতাবাসের দু’জন কর্মকর্তাও কক্সবাজারে রয়েছেন।
রোহিঙ্গারা বলছেন, নাগরিকত্বসহ পাঁচটি শর্ত না মানলে কিছুতেই তারা মিয়ানমার ফিরবেন না। কারণ তারা মিয়ানমার সরকারকে বিশ^াস করে না। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, বসতভিটাসহ সম্পদ ফেরত ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত না হলে মিয়ানমারে ফিরতে নারাজ রোহিঙ্গারা। পাশাপাশি মিয়ানমারের মাবাইয়ে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকেও মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া এপার থেকে যারা যাবেন, তাদের ওপারের কোনো ক্যাম্পে নয়, সরাসরি নিজেদের পুরনো বসতভিটায় যেতে দিতে হবে। অন্যথায় মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে কোনো লাভ নেই বলে তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গারা অভিমত প্রকাশ করেছেন। টেকনাফের শালবাগান ২৬ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মুহাম্মদ রিয়াজ (৩২), রশিদ আমিন (৪৫) হোসেন আহমদ (৫২) এসব কথা বলেন।
এর আগেও রোহিঙ্গারা সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের দাবি করেন। বিশেষ করে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরব হয় মিয়ানমার সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তিন হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে মিয়ানমার রাজি হয়।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছিল। রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় তখন কাউকেই রাখাইনে পাঠানো সম্ভব হয়নি। মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সৃষ্টি করে দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হোক। এমন প্রত্যাশা সচেতন মহলের।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলা হয়। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। পুরনোসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন।
প্রত্যাবাসনের বিপক্ষ এনজিওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে প্রচারণা চালানো এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমার ফিরে না যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অনেক এনজিও প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব এনজিওকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোহিঙ্গাদের জীবনে আরাম কমানো হবে, যাতে তারা ফিরতে রাজি হয়। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়নি। কোনো রোহিঙ্গা সম্মত হলে তাকে ফেরত পাঠানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ড. মোমেন এসব কথা বলেন। এর আগেই কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সম্মতি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারার খবর আসে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের মূলে রয়েছে আস্থার অভাব। আস্থা তৈরির জন্য কক্সবাজার ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা নেতা বা মাঝিদের রাখাইন সফরের ব্যবস্থা করতে প্রত্যাবাসন বিষয়ক চতুর্থ ওয়ার্কিং গ্রুপে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যাতে তারা প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কি-না তা সরেজমিন দেখতে পারে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি। এই সঙ্কটের সমাধান তাদেরই করতে হবে। আমরা জোর করে কাউকে পাঠাব না। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন চায়।
সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়াকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম গতকাল স্বল্প আকারে হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা শুরু হয়নি। তবে আমরা আশা ছাড়িনি। আমরা এখনো আশায় বুক বেঁধে আছি। পরবর্তী সময়ে কী করব, তা আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো।
রোহিঙ্গা সঙ্কট সুরাহায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিশন গঠনের চিন্তা-ভাবনা সরকার করছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে স্বেচ্ছায় ফিরে না গেলে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর পাঠানো হবে বলে সাবধান করে দেন ড. মোমেন।
রোহিঙ্গাদের আস্থা সৃষ্টি অত্যাবশ্যক : জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের দেয়া তালিকা অনুযায়ী উদ্বাস্তুরা স্বেচ্ছায় ফিরতে রাজি আছে কি না তা যাচাই করতে গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ইউএনএইচসিআর মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত সাক্ষাৎকার নেয়া একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যেতে সম্মতি জানায়নি। স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তালিকাভুক্ত উদ্বাস্তুদের সাক্ষাৎকার নেয়ার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা দিয়ে যাবে ইউএনএইচসিআর। প্রত্যাবাসনের জন্য উদ্বাস্তুদের আস্থা সৃষ্টি অত্যাবশ্যক।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত জুলাইতে মিয়ানমারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সাথে দেখা করেছিলেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাথমকি পদক্ষেপ এবং সংলাপ অব্যাহত থাকা প্রয়োজন। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সম্পৃক্ততা বাড়াতে জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন তহবিলকে (ইউএনডিপি) সাথে নিয়ে ইউএনএইচসিআর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকারকে সহযোগিতা দিচ্ছে। এর লক্ষ্যÑ রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি। এ জন্য রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আদি নিবাসগুলোতে ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরের আরো কার্যকর প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।
এতে বলা হয়, স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের আস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। প্রত্যাবাসন একটি প্রক্রিয়া, এটি একক কোনো ঘটনা নয়। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সমর্থন দিতে ইউএনএইচসিআর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড যেতে চায় সংসদীয় কমিটি
সংসদ প্রতিবেদক জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড সফরের জন্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
গতকাল কমিটির এক বৈঠকে এ ছাড়াও রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনরত এনজিওদের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সেফ জোন সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখারও সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো: আব্দুল মজিদ খান, কাজী নাবিল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশগ্রহণ করেন।
সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি ও মিয়ানমারের সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে দেশের ভাবমর্যাদা এবং নিরীহ মানুষকে রক্ষার জন্য বিদেশে অবস্থানরত চিহ্নিত বাংলাদেশী দালাল চক্র যারা অবৈধ মানব পাচারে জড়িত তাদের বিদেশ থেকে দেশে আগমন করার সাথে সাথে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: শহীদুল হক, মেরিটাইম এফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খোরশেদ আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা জানান, কালিগঞ্জে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে আলমগীর হোসেন (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্র মারা গেছে। আলমগীর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীকলা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম গাজীর ছেলে।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শেখ তৈয়বুর রহমান জানান, আলমগীর গত ১৯ আগস্ট বিকেলে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঈদ উপলক্ষে আলমগীর হোসেন বাড়িতে আসে। ঈদের পর জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে গত সোমবার বিকেলে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আলমগীরকে সাতক্ষীরায় সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাকে খুলনায় নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। পরবর্তীতে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫টায় আলমগীরের মৃত্যু হয়। কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ জন চিকিৎসাধীন আছেন। কালিগঞ্জে এই প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement