২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
নুসরাত রাফি হত্যা

মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য শুরু

-

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহআলম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে তার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১০ এপ্রিল মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হলে তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পান পরিদর্শক মো: শাহআলম। তিনি আদালতে জানান, মামলাটির তদন্ত শেষে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিই। অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলোÑ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহসভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল। তদন্তকালে ২১ জনকে গ্রেফতার করি। এর মধ্যে ১২ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। মামলায় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি।
পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, আগামী রোববার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহআলমের সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষাকেন্দ্রে গেলে নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো: শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করলে আদালত তা অনুমোদন করেন। গত ২৭ জুন মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী নুসরাত রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মনিকে আদালতে হাজির
সোনাগাজী (ফেনী) সংবাদদাতা জানান, মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেনের অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন করার জন্য গত মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের হাজির করা হয়েছে। প্রথমে ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ মামলার ১৬ জন আসামির মধ্যে ১৫ জনকে আদালতে হাজির করেন। ফেনীর কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানি জানান, ৯ মাসের গর্ভবতী আসামি কামরুন নাহার মনিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ প্রথমে আদালতে হাজির করেননি। কারা কর্তৃপক্ষ তার অসুস্থতার বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে অবহিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আবার মনিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ বিষয়ে জানতে ফেনী জেলা কারাগারের জেলার দিদারুল আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কোর্ট পরিদর্শকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
আসামি কামরুন নাহার মনির স্বামী রাশেদুল ইসলাম রাজু জানান, সে ৯ মাসের গর্ভবতী। মামলার হাজিরার জন্য প্রতিদিন তাকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। সোমবার রাত থেকে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মঙ্গলবার প্রথমে আদালতে হাজির করেননি। পরে আবার তাকে আদালতে আনা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement