১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রাফি হত্যায় দুই সহপাঠীর সাক্ষ্য

‘মৃত্যুর আগে নুসরাতের লেখা চিঠি ফেসবুকে পেয়েছে তারা’

-

‘নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা কর্তৃক শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে দুই সহপাঠী সাথী ও তামান্নাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখেছিল। ওই চিঠিতে নুসরাত পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। তার মৃত্যুর আগের দিন ৯ এপ্রিল চিঠিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। সেখানেই তাদের উদ্দেশে লিখা চিঠিটি দেখতে পায় তার দুই সহপাঠী তানজিনা বেগম সাথী ও বিবি জাহেদা বেগম তামান্না।’ গতকাল মঙ্গলবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্যপ্রদানকালে এমন কথা জানায় তারা। একই দিন মাদরাসার পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মাওলানা নুরুল আফসার ফারুকীও সাক্ষ্যপ্রদান করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে কেন্দ্র সচিব ও দুই সহপাঠীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন।
আদালতে কেন্দ্র সচিব মাওলানা নুরুল আফসার ফারুকী বলেন, ‘ঘটনার পর ১০টা ২৫ মিনিটে পুলিশের সাথে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে যাই। সেখানে কেরোসিন মিশ্রিত পলিথিন, বোরকার পোড়া অংশ, এক জোড়া স্যান্ডেল ও পাপোস দেখতে পাই।
আজ বুধবার এ মামলায় আরো চারজন সাক্ষ্য দেয়ার কথা রয়েছে। এরা হলেন- মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুজিস্তা খানম, আয়া বেবি রানী দাস, সহপাঠী আকলিমা আক্তার ও কাউসার মাহমুদ। এ মামলায় ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে এরই মধ্যে ২১ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো: শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন- মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদরাসার গভর্নিং বডির সহসভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করলে আদালত তা অনুমোদন করেন। গত ২৭ জুন মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী নুসরাত রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement