২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যত বেশি আঘাত এসেছে আ’লীগ তত বেশি শক্তিশালী হয়েছে : শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : বাসস -

আওয়ামী লীগকে হীরার সাথে তুলনা করে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে হীরার টুকরা। হীরা যত কাটা হয়, তত বেশি উজ্জ্বল হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগের ওপর অনেক আঘাত এসেছে। তবে যত বেশি আঘাত এসেছে, আওয়ামী লীগ তত বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় কোথায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি ছিল, তা খুঁজে খুঁজে পুড়িয়ে দেয়া হয়। স্বাধীনতার পরও অত্যাচার-নির্যাতন থেমে থাকেনি। ১৯৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর আবারো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন নেমে আসে। তবে শত অত্যাচার-নির্যাতনেও আওয়ামী লীগ কখনো ভেঙে পড়েনি। এর পেছনে রয়েছে মানুষের জন্য কর্তব্যবোধ, দায়িত্ববোধ, ভালোবাসা, ত্যাগ-তিতিক্ষা। এসব আছে বলেই আওয়ামী লীগ ৭০ বছর ধরে টিকে আছে।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানীর কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, মওলানা ভাসানী আমাদের দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন সত্য, কিন্তু তার যদি কখনো কিছু প্রয়োজন হতো সাথে সাথে চিঠি লিখতেন। বঙ্গবন্ধু কোনো দিন কোনো কিছু মনে করতেন না। সাথে সাথে তার যা কিছু প্রয়োজন তাকে পাঠাতেন। আমি ফিরে আসার পরও তার স্ত্রী যত দিন বেঁচেছিলেন যা লেগেছে, আমি সবরকমের সহযোগিতা করেছি। চলে গেছে ঠিকই কিন্তু তিনি তো আমাদের ইতিহাসের একটা অংশ, যে দলেই যাক না কেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তানিরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে জানা যায়, আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হককে গ্রেফতার করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দিনের পর দিন তিনি কারাগারে অত্যাচার সহ্য করতে পারেননি। অত্যাচার-নির্যাতনে তিনি কিভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন।
হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতাকে আওয়ামী লীগই আবার ফিরিয়ে এনেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলা স্বাধীনতা হারিয়েছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়েছিলেন মীরজাফরের ষড়যন্ত্রে। এই মীরজাফর তো গালিতেই পরিণত হয়েছে। এরপর দুই শ’ বছর ব্রিটিশ বেনিয়ারা শাসন করেছে এই ভূখণ্ড। দুই শ’ বছর পর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সেই দুই শ’ বছর আগে হারিয়ে ফেলা স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতাকে আওয়ামী লীগই আবার ফিরিয়ে এনেছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের ইতিহাস জড়িত। বঙ্গবন্ধু সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে এ সংগঠনকে দাঁড় করান এবং বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্জনের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ উজ্জ্বল। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে স্বাধীনতা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী এখন আমরা মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছি। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সে লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন এ দেশের মানুষ কিছু পায়। আমরা কোনো অহমিকা করব না। মাটির সাথে মানুষের সাথে মিশে দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে এ দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। একই সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও হত্যা করে। এর মাধ্যমে দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছিল তারা। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সেই অগ্রগতি আবার শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে এ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ১৯০৯ ডলার। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের মানুষ যেন সুখে শান্তিতে থাকে সে জন্য আমরা কাজ করছি।
এ সময় মুজিব আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলের নেতাকর্মীদের মানুষের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত ও উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ।
যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, মহানগর কমিটি, সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement
‘কাম না করলে তো ভাত জুটবো না, তাই রোইদের মধ্যেই কাম করি’ গাজা ইস্যুতে ইউরোপের নীতির সমালোচনায় অ্যামনেস্টি রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রতিবাদ : নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৩৩ জন গ্রেফতার বিপজ্জনক মাত্রার অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি থেকে বাঁচবেন কিভাবে বিয়ের বাজার শেষে বাড়ি ফেরা হলো না চাচা-ভাতিজির প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় ৩ সংস্থার মশলায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান সাবেক শিবির নেতা সুমনের পিতার মৃত্যুতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের শোক গণকবরে লাশ খুঁজছেন শত শত ফিলিস্তিনি মা ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আলোচনায় নেতাদের ভাই-বোন ও সন্তান সংখ্যা

সকল