২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা :পিআইডি -

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের অঙ্গীকার।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাঙালি জাতি সমগ্র বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। যে মর্যাদা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাঙালি জাতি হারিয়ে ছিল। তিনি বলেন, বাংলার হারানো স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বাংলার জনগণ কিছু না কিছু পেয়েছে।
বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব থেকে প্রাচীন এবং বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মাহুতি দানকারী দলের নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা সিনিয়র নেতাদের সাথে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে অপর একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ এবং অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান এবং পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এস এস রেজাউল করিম, রেলওয়েমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা: দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমেদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট মেজবাহউদ্দিন সিরাজ এবং দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের পাশাপাশি মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘দারিদ্র্যের হার আমেরিকার চেয়েও কমিয়ে আনব’ : দেশে দারিদ্র্যের হার আমেরিকার চেয়েও কমিয়ে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দারিদ্র্যের হার আজকে ২১ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আমার লক্ষ্য আছে দারিদ্র্যের হার আরো কমিয়ে আনা। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন অ্যাকাডেমিতে চলমান ১১০তম, ১১১তম এবং ১১২তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমেরিকায় দারিদ্র্যের হার বোধ হয় সতেরো কি আঠারো শতাংশ। যে করেই হোক তার (আমেরিকা) থেকে এক পারসেন্ট (শতাংশ) হলেও আমাকে কমাতে হবে। ‘বাংলাদেশকে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। আর সেটা মাথায় রেখেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, হতদরিদ্রের হার আমাদের ১১ শতাংশ। হতদরিদ্রদের জন্য বিশাল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি।
সরকারি সহায়তা পেয়ে কেউ যেন কর্মবিমুখ না হয় সেভাবে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সহায়তা এমনভাবে দিতে হবে যাতে একেবারে না খেয়ে থাকে কিন্তু কর্মবিমুখ না হয়। না খেয়ে কষ্ট পাবে না কিন্তু কর্মবিমুখ হতে পারবে না। সবাইকে কাজ করতে হবে সেভাবে, সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে, শিক্ষা দিতে হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসনবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মদ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন অ্যাকাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তার।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, নানা কর্মসূচি ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্তকরণ ও বেলুন উড়ানো, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ গতকাল দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও আশপাশের রাস্তায় এসে ভিড় জমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি উদ্বোধন শেষে স্থান ত্যাগ করার পরই দলটির সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীমসহ সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘শুভ শুভ শুভ দিন, আওয়ামী লীগের জন্মদিন’ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’সহ নানা ¯েøাগান দেন। মো: শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, সাদেক খানের নেতৃত্বে উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীরা, অ্যাডভোকেট মোল্লা মো: আবু কাউছারের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা, নাজমা আকতারের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলুর নেতৃত্বে ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগ, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর হাজী আবুল কালাম অনুর নেতৃত্বে ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা, কদমতলী থানার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা, বঙ্গবন্ধু জয়বাংলা লীগের সভাপতি আহসান উল্লাহ মনি ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাউল করীম চৌধুরী বাবুলের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। কদমতলী থানার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমানের উদ্যোগে নিজ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর রূহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়াও মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু ছাত্র কল্যাণ পরিষদ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগসহ সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচির অংশ হিসেবে টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব:) ফারুক খানের নেতৃত্বে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে সর্বদলীয় কর্মী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যদিও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৫ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। নতুন নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামে পরিচিতি লাভ করে।


আরো সংবাদ



premium cement
পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১

সকল