গণতন্ত্রের নেত্রী কারান্তরালে, দেশ চলছে একনায়কতন্ত্রে : ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন দল হয়ে পড়েছে। সরাসরি একদলীয় শাসন কায়েম না করে সংসদকে ব্যবহার করে একদলীয় ব্যবস্থা চালাচ্ছে। কথায় কথায় বলা হয় ন্যায়বিচার কিন্তু কোথায় ন্যায়বিচার, দেশে আজ অরাজকতা, সমাজে বিশৃঙ্খলা, খুন, ধর্ষণ আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। বন্দুক আর বুটের নিষ্পেষণ দিয়ে দেশ শাসন করা যায় না। তাই বিএনপি আন্দোলন করে নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আবারো নির্বাচন আদায় করে নেবে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত স্থানীয় বিএনপির কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন গণতন্ত্রের নেত্রী আজ কারান্তরীণ। দেশ চলছে ’৭৫-এর বাকশালী কায়দায় একনায়কতন্ত্রে। সময় এসেছে আবারো গণতন্ত্রকে উদ্ধারের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের। বর্তমান সংসদ অবৈধ সংসদ, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, জনগণের ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, আমরা জনগণের অধিকার রক্ষা করতে পারিনি। এ সরকার দেশের রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। আমরা ব্যালটে বিশ্বাস করি বলে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার করে ভোটে অংশ নিয়েছিলাম। এবারের কারচুপির নির্বাচনে আওয়ালীগ জিতেছে কিন্তু গণতন্ত্র পরাজিত হয়েছে।
সভায় মো: আসগর আলীর সভাপতিত্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এবার হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব টাকা লুটেরাদের পকেটে যাবে। ধনি আরো ধনি হবে। এবারের বাজেটের আয়ের বেশির ভাগ অর্থ যাচ্ছে সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে। তাদের গাড়ি, অনুদানসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের কথা ভাবা হয়নি। তাই সাধারণ মানুষের মুখে হাসি নেই। কারণ বড়লোকদের জন্য যে বাজেট, তাতে তারা ঋণ করে আরো বড়লোক হবে। এ থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে। মানুষকে সব অন্যায়-অবিচার থেকে রক্ষা করতে হবে। কর্মীদের বলি, হতাশ হলে চলবে না। আন্দোলনে জিতার জন্য মাঝে মাঝে পিছিয়ে আসতে হয়।
ইনশা আল্লাহ, আমরা তৃণমূলের রাজনীতি আরো জোরদার করব। আমাদের ছাত্রদল, যুবদল, কৃষকদলসহ সব অঙ্গসংগঠনের কর্মীদের নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আইনের মাধ্যমে মুক্ত করে আনব। ভোট, ব্যালট ছাড়া আমাদের কোনো অস্ত্র নেই। আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। তাই অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আমাদের দাবি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
অনুষ্ঠিত যৌথ কর্মিসভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক, ইসমাইল হোসেন, রেজুয়ানুল হক বিশ্বাস, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েস, যুবদলের সভাপতি মোতায়ের হোসেন, মহিলা দল সভানেত্রী নাজমা পারভীন, ছাত্রদল সম্পাদক রিয়াদ হোসেন ও বিএনপির উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, আব্দুল্লা আল মামুন, সুলতানুল ফেরদৌস ন¤্র, আনছারুল ইসলাম, শরিফ আহমেদ প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলাযুবদল সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান তুহিন, হরিপুর উপজেলার ছাত্রদল, যুবদল, কৃষকদলের বিভিন্ন স্তরের শত শত নেতারা।
আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা জানান, উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজনে রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ হল রুমে কর্মী সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বন্দুকের নল দেখিয়ে জনগণকে ঠকিয়েছে এই সরকার। এতে বিএনপি ঠকেনি বরং হত্যা করা হয়েছে গণতন্ত্রকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছিল দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তাই সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে উজ্জীবিত করতে হবে। তাই আসুন গণতন্ত্র উদ্ধারের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি দেশকে কলুষিতমুক্ত করি। এ সরকারের পতন ঘটিয়ে জাতিকে মুক্ত করি।
সোমবার বিকেলে কর্মী সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এ কথাগুলো বলেন। এ সময় কর্মিসভায় আরো বক্তব্য রাখেনÑ জেলা বিএনপির সভাপতি তৈয়মুর রহমান, সহ-সভাপতি ন¤্র চৌধুরী, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোরুল হক, হরিপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ ইসমাঈল হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজুয়ানুল হক বিশ্বাস, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েস, জেলা যুবদলের সভাপতি আবনুর চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুবদলের সভাপতি মো: মনিরুজ্জামান মনি ও যুবদলের সহ-সভাপতি মাহমুদুন নবী পান্না, মহিলা দলের সভানেত্রী নাজমা পারভীন, উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন প্রমুখ। যৌথ কর্মিসভা উপস্থাপন করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হযরত আলী। উপজেলা পৌর বিএনপির সভাপতি সাহাজান আলী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।