সরকারের দুর্নীতি লুটপাটে জনগণ অতিষ্ঠ

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে এটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে, তার ইচ্ছাতেই বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ বেগম জিয়াকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক রসিকতায় প্রধানমন্ত্রী তার নিষ্ঠুর মনেরই পরিচয় দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সরকারের মহা দুর্নীতি আর লুটপাটে দেশে মানুষ অতিষ্ঠ বলে রিজভী মন্তব্য করেন।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে সংগঠনের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সরোয়ার, সাদরেজ জামান, ঢাকা মহানগরীর ফখরুল ইসলাম রবিন, হারুন অর রশিদ, ঢাকা জেলার নাজমুল হোসেন অভি, মুন্সিগঞ্জ জেলার ইদ্রিস মিয়াজী ভিপি মোহন, নারায়ণগঞ্জ জেলার আনোয়ার সাদাৎ সায়েম, মাহবুবুর রহমান, গাজীপুর জেলার রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, সরদার মো: নূরুজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মামুনসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েক শ’ নেতাকর্মী।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মধ্যরাতের ভোটের সরকারের প্রতিহিংসা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী ও গণমানুষের ভরসাস্থল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে জীবন বিপন্ন করার পাঁয়তারা করছে। দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে আমরা বাইরে বসে থাকতে পারি না, তার মুক্তির জন্য দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আওয়াজ তুলতে হবে। যেই নেত্রী গণতন্ত্রের পক্ষে, মত প্রকাশের পক্ষে সেই দেশনেত্রীকে নির্যাতন করে শেখ হাসিনা আনন্দ পান। গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না করলে দেশ খাদের কিনারে পড়ে অতলে তলিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার আগুন নেভাতে হলে আমাদের রাজপথে আসন গ্রহণ করতে হবে।
তিনি সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করে বলেন, দেশে লক্ষ লক্ষ তরুণ বেকার, কর্মসংস্থান নেই, ধানের ক্ষেতে আগুন, দূষিত পানি সরবরাহ, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অথচ সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের গলাবাজি থামছে না। লুটপাটের উন্নয়নের কথা শুনতে শুনতে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চাপাবাজি দিয়ে জনগণের ক্ষোভকে নেভানো যাবে না। যে দেশনেত্রী স্বৈরশাসকদের বন্দিশালা থেকে বারবার অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়েছেন সেই দেশনেত্রী ‘গণতন্ত্রের মা’ কে বন্দী রেখে বর্তমান সরকার যে নিষ্ঠুর খেলা খেলছে তার পরিনাম শুভ হবে না।
রিজভী বলেন, বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ভয়াবহ দুঃশাসন ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর যে হিংস্র আচরণ চালাচ্ছে তাতে বিশ্বের সব স্বৈরাচারের ইতিহাস হার মেনেছে। নারী-শিশু নির্যাতনকারী ও দখলবাজ-লুটেরারা দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বেপরোয়া নারী-শিশু নির্যাতন থেকে শুরু করে গুম, খুন, অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুপ্ত হত্যা এবং জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় দেশের মানুষ এখন সর্বদা আতঙ্কিত জীবনযাপন করছে। এই ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি।