১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিকৃত তথ্যে ইরানে হামলার পক্ষে নন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা

-

ইরানের বাড়তি হুমকি নিয়ে কোনো ধরনের বিকৃত গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেশটিতে হামলা চালানোর পক্ষে নন মার্কিন কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্য। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মিত্রের সাথে ওই কংগ্রেস সদস্যরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পর তারা এ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, কোনো বিকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইরানে হামলা চালানোকে সমর্থন করবেন না তারা। এ দিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে সংলাপের ব্যাপারে তার দেশের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে কোনো সংলাপে বসবে না তেহরান। বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির সাথে আলোচনায় বসার উপযোগী নয়। অন্য দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারো হুমকি দিয়ে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থে হামলা হলে ইরানকে কঠোর জবাব দেয়া হবে। গত সোমবার ট্রাম্প ইরানকে সবশেষ এ হুমকি দেন তিনি। এর আগে রোববার এক টুইটে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ বাধালে ইরান ধ্বংস হয়ে যাবে। খবর এএফপি, আল জাজিরা ও রয়টার্সের।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে এক গোপন ব্রিফিং সামনে রেখে ট্রাম্পের ওই মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ তুলে সামরিক হামলা চালানোর ন্যায্যতার কথা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান ও জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড আজ বুধবার সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের ইরান ইস্যুতে হালনাগাদ তথ্য জানাবেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার আট আইনপ্রণেতার একটি দলকে এ সম্পর্কে জানিয়েছেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করা ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, সব নির্বাচিত আইনপ্রণেতাকে নিয়ে একটি বড় বৈঠকের আয়োজন করতে হবে।
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন হোয়াইট হাউজে তার নতুন এই চাকরিতে যোগ দেয়ার বহু আগেই ইরানে হামলার পক্ষে কট্টর অবস্থান নিয়ে আছেন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, জন বোল্টনের কাছ থেকে তিনি ইরানের হুমকির বিষয়ে ব্রিফিং শুনেছেন। গত কয়েক সপ্তাহে এটা পরিষ্কার হয়েছে, ইরান অন্যদেশের পাইপলাইন ও জাহাজে হামলা চালিয়েছে। ইরাকে মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে একটি আতঙ্কের স্রোত তৈরি করেছে দেশটি। তিনি বলেন, যদি মার্কিন নাগরিক ও স্বার্থের বিরুদ্ধে ইরানি হুমকি সক্রিয় হয়ে ওঠে, তবে অবশ্যই আমাদের সর্বাত্মক জবাব দিতে হবে। তবে গ্রাহামের বক্তব্যকে দ্রুতই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন অ্যারিজোনা থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য রুবেন গ্যালিগো। তিনি বলেন, অতীতেও আমি একই ধরনের গোয়েন্দা তথ্য দেখেছি। এক টুইটে তিনি বলেন, যা বলা হচ্ছে, তা সত্যি না। ইরানের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা যেসব তথ্য তুলে ধরছেন, তাতে পক্ষপাতিত্ব আছে।
আরেক ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস মার্ফি বলেন, মার্কিন মিত্র ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিনা উসকানিতে নাশকতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে ইরান, এমনটা বোঝাতে তথ্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছেন রিপাবলিকানরা। তিনি বলেন, ইরান যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার পক্ষে কারো সাফাই গাওয়া উচিত না। বেশ কয়েক বছর ধরে তারা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু অন্যপক্ষের প্রতিরক্ষামূলক কিংবা প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপকে সত্যিকার উসকানি ও প্ররোচনামূলক ধরে নিলে নির্বোধের যুদ্ধ শুরু হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে কোনো আলোচনা নয় : রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে সংলাপের ব্যাপারে তার দেশের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে কোনো সংলাপে বসবে না তেহরান। বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির সাথে আলোচনায় বসার উপযোগী নয়। গত সোমবার তেহরানে আলেম ও ধর্মীয় নেতাদের এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি সংলাপ ও কূটনীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি কিছুতেই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সংলাপের অনুমতি দেব না।
রুহানি জানান, গত বছর জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি নিউ ইয়র্কে থাকার সময় পাঁচজন বিশ্বনেতা তাকে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়া গত বছরই ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আটবার আলোচনায় বসার আহবান প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
রুহানি বলেন, এ মুহূর্তে পরিস্থিতি মোটেও সংলাপের অনুকূল নয়। এখন আমাদের নীতি হচ্ছে প্রতিরোধ এবং দৃঢ় মনোবল প্রদর্শন করা। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও অর্থনৈতিক যুদ্ধের মোকাবেলায় ইরান সরকার ও জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মার্কিন স্বার্থে হামলা হলে কঠোর জবাব : ট্রাম্প
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে ফের হুমকি দিয়ে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থে হামলা হলে ইরানকে কঠোর জবাব দেয়া হবে। গত সোমবার ট্রাম্প ইরানকে সবশেষ এ হুমকি দেন। এর আগে রোববার এক টুইটে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ বাধালে ইরান ধ্বংস হয়ে যাবে।
ট্রাম্পের ওই টুইটের আগে একই দিন ইরাকের রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছের একটি সুরক্ষিত এলাকায় রকেট হামলা হয়। ওয়াশিংটনের সন্দেহ, শিয়া মিলিশিয়ারা এ হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের সাথে ইরানের যোগাযোগ রয়েছে। সোমবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করেন, ইরান যদি কিছু করে তাহলে তারা ভয়ঙ্কর জবাব পাবে।
মার্কিন সরকারের সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সন্দেহ, ইরানের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন শিয়া মিলিশিয়ারা বাগদাদে রকেট হামলা চালিয়েছে। এ হামলা চালাতে ইরান তাদের উৎসাহ দিয়ে থাকতে পারে।
ইরানের সাথে করা পরমাণু চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পরই ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
সম্প্রতি উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। আর ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে আংশিক বেরিয়ে যাওয়া এবং পারমাণবিক কর্মসূচি ফের শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরো বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের যুদ্ধ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল! অসুস্থ নেতাকর্মীদের পাশে সালাম-মজনু গলাচিপায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু মসজিদের ভেতর থেকে খাদেমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে সৎভাইকে কুপিয়ে হত্যা দুবাই পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণ কি কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরানো? এ দেশের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান

সকল