২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ময়মনসিংহ মেডিক্যালে ছাত্রীর শ্লীলতাহানিতে বিক্ষোভ ধর্মঘট

ঈশ্বরগঞ্জে শিশু ও গোলাপগঞ্জে গৃহবধূ ধর্ষণ
-

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজছাত্রী নিবাসের সামনে এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন ও প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ছয় ঘণ্টা অবস্থান ও বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ছাত্রী নিবাসের দুই কর্মচারী সেলিম ও বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত বুধবার কলেজের এম-৫৫ ব্যাচের এক ছাত্রী ইফতার নিয়ে হোস্টেলে প্রবেশের সময় ওঁৎ পেতে থাকা বহিরাগত এক বখাটে তার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বিষয়টি হোস্টেল সুপার ও কলেজ অধ্যক্ষকে অবহিত করার পর কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো শিক্ষার্থীদেরকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলে। এতে ফুঁসে উঠেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত টানা ছয় ঘণ্টা কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এ দিকে বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীদের হাতে ছাত্রী নিবাসের দারোয়ানকে মারধরকে কেন্দ্র করে কর্মচারীদের সাথে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজ প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা বৈঠকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন সাংবাদিকদের জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজ প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাবে প্রায়শই নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেও নিরাপত্তা নিশ্চিত ও বহিরাগত ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিনিয়তই বহিরাগতরা হোস্টেলে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করছে। রুমে প্রবেশ করছে, চুরি হচ্ছে। মাদক সেবন করছে। নিরাপত্তার দাবিতে একাধিকবার সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ মোতায়েনের দাবি করা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ডা: আনোয়ার হোসেন জানান, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় ও শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ছাত্রী নিবাসের প্রধান ফটকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক আনসার সদস্য মোতায়েন, সীমানা প্রাচীরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা জানান, ঈশ্বরগঞ্জে এক শিশু পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে শিশুটির পরিবার। তারা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির পাশে প্রতিবেশীর একটি দোকানের সামনে একা খেলছিল শিশুটি। ওই সময় দোকানদার মজনু (৩৫) শিশুটিকে চিপস ও চকলেট দিয়ে পাশের পাটক্ষেতে যেতে বলে। পরে মজনুর কথায় পাটক্ষেতে যায়। পরে মজনু পাটক্ষেতের মধ্যে শিশুটির মুখচেপে ধরে ধর্ষণ করে। ওই সময় শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশী এক মহিলা এগিয়ে গেলে মজনু পালিয়ে যায়। শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী বলে জানিয়েছে পরিবার। শিশুটির বাবা নেই মা ঢাকায় পোশাক কোম্পানিতে চাকরি করেন। দিনমজুর নানার কাছে থেকে সে স্কুলে পড়ছে। ওইদিন শিশুটির নানা কাজে থাকায় ঘটনাটি শুনেছেন রাতে। পরে এলাকার লোকজনের কাছে সত্যতা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটিকে নিয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আহম্মেদ কবীর হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে মজনুকে আটক করতে পুলিশি অভিযান চলছে।
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, গোলাপগঞ্জের পল্লীতে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে সফাই মিয়া (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার সহযোগী পলাতক আসামিরা হলোÑ আমুড়া নয়াটুল গ্রামের সুপার (২৭) ও একই উপজেলার ইসলামটুল গ্রামের এমাদ (৩৫)। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউপির ইসলামটুল গ্রামে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতা তিনজনকে আসামি করে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
জানা যায়, ধর্ষিতার স্বামী দেলওয়ার হোসেনের সাথে আটক সফাই মিয়া, এমাদ ও সুপারের সুসম্পর্ক থাকায় প্রায়ই তারা ওই বাড়িতে যাতায়াত করতেন। গত মঙ্গলবার রাত ১১টায় সুপার ও এমাদ মিলে দেলওয়ার হোসেনকে কৌশলে বাড়ি থেকে বের করে এনে গল্প গুজব করে সময় কাটাতে থাকেন। ওই সুযোগে সফাই মিয়া গৃহবধূকে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষিতাকে মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য পুলিশ সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। আটক সফাই মিয়ার বাড়ি একই উপজেলার ইসলামটুল গ্রামে। সে আখল মিয়ার ছেলে।
কুমিল্লায় ধর্ষককে গণধোলাই
কুমিল্লা সংবাদদাতা জানান, কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ৯ বছরের শিশু ধর্ষণকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। উপজেলার মনিপুর এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে। ধর্ষক মনিপুর গ্রামের মৃত মো: আবদুল আজিজের ছেলে কবির হোসেন (৩৭)। জানা যায়, উপজেলার মনিপুর আন্দিরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে ১০ বছর ধরে ভাড়ায় থাকতেন এক ভ্যানচালক। প্রতিদিনের মতো তিনি সকালে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে যান। বাড়িতে তার ৯ বছরের কন্যা শিশুসহ আরো দুই শিশু ছিল। এ সুযোগে পাশের বাড়ির মাদক কারবারি কবির হোসেন ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা কবির হোসেনকে বাড়ির পাশ থেকে আটক করে গণধোলাই দেন। পরে বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোহাম্মদ শাহীন কাদিরের কাছে সোপর্দ করে।
বুড়িচং থানার ওসি আনোয়ারুল হক জানান, ধর্ষক পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেডিক্যালে কলেজে পাঠানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement