২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেরানীগঞ্জে মহিলা কারাগার প্রস্তুত

খালেদা জিয়ার জন্য ৪ রুম, বাইরে বসবে আদালত
-

কেরানীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে নবনির্মিত মহিলা কারাগারের সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। আপাতত এ কারাগারে বন্দী হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাখার পরিকল্পনা কারা কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত করেছে। সেই লক্ষ্যে কারা অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশের একটি একতলা ভবনের চারটি রুমের ভেতর ও বাইরের ডেকোরেশন সম্পন্ন হয়েছে। আর কারাগারের দেয়ালসংলগ্ন তিনটি রুমের একটিতে খালেদা জিয়ার বিচারকাজ পরিচালনায় আদালত বসানোর পরিকল্পনা অনেকটা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তারের পরামর্শে তাকে যেকোনো সময় আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে। যদি কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয় তাহলে তাকে পুরান ঢাকার জরাজীর্ণ সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নয়, নেয়া হবে কেরানীগঞ্জের নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় মহিলা কারাগারে। এই কারাগারের নির্মাণকাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
আজ শনিবার সকাল ৯টায় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা মহিলা কারাগারের কাজের সার্বিক অগ্রগতি সরেজমিন দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গত মাসেও তিনি এ কারাগার পরিদর্শন করেছেন। তখন মহিলা কারাগারে বিদ্যুৎ, পানির লাইনসহ ১০ শতাংশ কাজ বাকি ছিল।
কারা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, আজ আইজি প্রিজন্স ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী কেরানীগঞ্জের মহিলা কারাগার পরিদর্শনে আসবেন। এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দুপুরে এবং বিকেলে কারাগারের ভেতর ও বাইরের সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, নবনির্মিত কারাগারটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর এখানে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা চূড়ান্তপর্যায়ে রয়েছে। সেই লক্ষ্যে কারাগারের প্রধান গেট দিয়ে ঢুকে ডান পাশের (পশ্চিম) তিনটি ভবনের পরের একটি একতলা ভবনের চারটি রুমের ডেকোরেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি রুমে লাগানো হয়েছে এয়ারকন্ডিশন। বাথরুমে হাই কমোড লাগানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ও পানির লাইন ছাড়াও লাগানো হয় ঝরনা। তার রুমের চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। আইজি প্রিজন্স ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আজ কারাগার পরিদর্শনের বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, নতুন কারাগার নির্মাণের কাজ সন্তোষজনক কি না সেটি দেখাই মূলত পরিদর্শনের উদ্দেশ্য। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কারাগারের বাইরের দেয়ালসংলগ্ন তিনটি ঘরের (গুদাম) মধ্যে মাঝখানের একটি ঘরকে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
কবে নাগাদ খালেদা জিয়াকে এই কারাগারে আনা হবেÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেকোনো সময় আনা হবে। যদি তাকে (খালেদা) এ কারাগারে আনা হয়, তাহলে আপাতত অন্য কোনো মহিলা বন্দীকে আর এখানে রাখা হবে না। গতকাল সন্ধ্যার পর কারা মহাপরিদর্শকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি। পরে ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স টিপু সুলতানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি এই মুহূর্তে ঢাকার বাইরে। তাই পরিদর্শনের বিষয়টি বলতে পারছি না। প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে একমাত্র কাশিমপুরে রয়েছে মহিলা কারাগার। এরপর কেরানীগঞ্জের এ কারাগারটি হচ্ছে দ্বিতীয় মহিলা কারাগার।


আরো সংবাদ



premium cement