২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা!

-

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সেতু মণ্ডল (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহত সেতু মণ্ডলের মা রেখা মণ্ডল বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেতু মণ্ডল সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী গোপাল মণ্ডলের মেয়ে। সে নিজ গ্রামের পাশে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর কবি নজরুল উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার আগেই প্রধান আসামি সোহেলকে নিজ বাড়ি থেকে গত বুধরার রাতেই আটক করা হয়। সে নবাবগঞ্জ এলাকার দৌলতপুর গ্রামের ফালান মিয়ার ছেলে।
সেতু মণ্ডলের জেঠা পবিত্র মণ্ডল জানান, গত বুধবার সকালে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় স্কুলছাত্রী। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করলে ওই দিন বিকেলে সে মারা যায়। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য স্কুলছাত্রীর লাশ মিডফোর্ট হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, গত ৯ এপ্রিল সেতু মণ্ডল স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর ফেরেনি। দুই দিন পর ১১ এপ্রিল ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গোলামবাজার ফাঁড়ি পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ তার বাড়িতে খবর দিলে পরিবারের লোকজন গোলামবাজার ফাঁড়ি থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে ফেরার পাঁচ দিন পর বুধবার সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কবিরুল ইসলাম জানান, ১১ এপ্রিল গোলামবাজার এলাকায় এক যুবকের সাথে ওই স্কুলছাত্রীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এতে পুলিশ যুবক ও স্কুলছাত্রীকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যুবককে ছেড়ে দেয়া হয় এবং স্কুল ছাত্রীকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়। এর পাঁচ দিন পর সেতু মণ্ডল আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় সেতু মণ্ডলের মা বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার সোহেলকে প্রধান আসামি এবং অজ্ঞাত আরো দু’জনকে আসামিকে করে অপহরণ, ধর্ষণসহ চারটি ধারা দিয়ে মামলা করেন। এ দিকে সেতু মণ্ডলের আত্মহত্যার খবরে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার শিক্ষালয়েও শোক এবং ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
সিরাজদিখান থানার ওসি মো: ফরিদউদ্দিন মামলার বাদির বরাত দিয়ে জানান, সেতু মণ্ডল উদ্ধারের সময় অনেকটা অচেতন ছিল। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তার মাকে জানিয়েছেÑ সোহেল নামে এক যুবক তাকে সেখানে নিয়ে যায়। পর দিন একটি স্থানে ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছিল এবং তাকে কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। মেয়েটি কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থার পরই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।


আরো সংবাদ



premium cement