২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ম্যালেরিয়া হ্রাস পেয়েছে ৮৮ শতাংশ দুই কোটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে

-

গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন হয়েছে। ২০০৮ সালের তুলনায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ৮৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ৯৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। তারপরও ১৩ জেলার ৭১টি উপজেলা এখনো ম্যালেরিয়াপ্রবণ রয়েই গেছে। এখনো প্রায় কোটি মানুষ মশাবাহিত এ রোগটির ঝুঁকির মধ্যে রয়ে গেছে। এ অবস্থার মধ্যেই সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে চায়।
সবচেয়ে বেশি যে ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়া রয়ে গেছে এদের সবগুলোর সাথে রয়েছে পার্শ্ববর্তী ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত। বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারের অঞ্চলগুলো ম্যালেরিয়া নির্মূলে কর্মসূচি জোরদার নয়। ফলে বাংলাদেশে ব্যবস্থা নেয়া হলেও ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা উল্লিখিত দুই দেশ থেকে চলে আসছেই। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলার টেকনাফে যে ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা সবাই ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
গতকাল মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় এসব তথ্য দেয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা। বিশেষজ্ঞ বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক বিশিষ্ট মেডিসিন অধ্যাপক ডা: এম এ ফয়েজ, অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা: বে-নজীর আহমেদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মান্নান বাঙালী, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল বিভাগের পরিচালক ডা: মো: আকরামুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা: সানিয়া তাহমিনা। বিষয়ের ওপর তথ্যভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা: এম এম আক্তারুজ্জামান।
১৩ জেলায় ঝুঁকিপ্রবণ হলেও ৫১ জেলায় কোনো রোগী নেই। তা সত্ত্বেও এই ৫১ জেলার ম্যালেরিয়া টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া রয়েছে বান্দরবান জেলায়। এ ছাড়া রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতেও রয়েছে অনেক। পার্বত্য এই তিন জেলা থেকে কিছুটা কম ম্যালেরিয়া রয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে। তার চেয়ে কম আছে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, শেরপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও কুড়িগ্রামে।
সবচেয়ে কম ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে ২০১৮ সালে, ১০৫২৩ জন এবং সময় মতো হাসপাতালে এসে চিকিৎসা না করায় মারা গেছে ৭ জন। তবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ায় সবচেয়ে বেশি ৪৫ জন মারা যায়। অবহিতকরণ সভায় বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে : পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম হওয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় করতে না পারা এবং চিকিৎসা প্রদান দুঃসাধ্য হওয়া, আন্তঃসীমান্ত চলাচল/পারাপারকারীদের মধ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের প্রবণতা, সব ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার আওতায় আনা।


আরো সংবাদ



premium cement