২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
একুশে পদক প্রদান

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশিষ্টজনদের হাতে একুশে পদক তুলে দিচ্ছেন :পিআইডি -

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বিপুলভাবে বিজয়ী করেছে। আমাদের ওপর দেশের মানুষ যে দৃঢ় আস্থা রেখেছেন, আমরা তার পরিপূর্ণ মূল্যায়ন করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।’
‘মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে বাংলাসহ বিশ্বের সব ভাষা ও সংস্কৃতির জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহান একুশে ফেব্রুয়ারি সেই রক্ত¯œাত গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বের ১৯৩টি দেশের মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের ২৬ কোটিরও বেশি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসঙ্ঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য আমরা এরই মধ্যে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে দাবি উত্থাপন করেছি। আমরা বিশ্বের সব ভাষা সংক্রান্ত গবেষণা ও ভাষা সংরক্ষণের জন্য ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেছি।’
তিনি বলেন, মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। ১৯৫২ সালের এ দিনে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণ দিয়েছিলেন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত, শফিউদ্দিন, সালামসহ আরো অনেকে। তমদ্দুন মজলিস ও অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেফতার হন। ১৫ মার্চ তারা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
তিনি এ দিনে ভাষাশহিদের স্মৃতির প্রতি ও বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সব ভাষাসৈনিকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
একুশ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পদক প্রদান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মর্যাদাপূর্ণ একুশে পদক বিতরণ করেছেন।
তিনি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২১ জন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক ২০১৯-এ ভূষিত করেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। এ বছরের একুশে পদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন : ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু এবং অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম। ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য একুশে পদক পেয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য।
মরহুম পপ শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর) ও নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের সাথে এবার সঙ্গীত বিভাগে এ পুরস্কার পান গায়ক সুবীর নন্দী।
সুবর্ণা মুস্তাফার সাথে লাকী ইনাম ও লিয়াকত আলী লাকী একুশে পদক পান অভিনয়ের জন্য।
দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আলোকচিত্রে অবদানের জন্য এবং চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ চারুকলায় এ পুরস্কার পান।
গবেষণায় ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ ও ড. মাহবুবুল হক এবং শিক্ষায় ড. প্রণব কুমার বড়ুয়াকে এ পদক প্রদান করা হয়। এছাড়া ভাষা সাহিত্যে রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস একুশে পদক পান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন এবং মরণোত্তর একুশে পদক বিজয়ী মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুনের পক্ষে তার কন্যা বেগম প্রজ্ঞা লাবনী এবং পপ সম্রাট আজম খানের পক্ষে তার কন্যা বেগম ইভা খান পুরস্কার গ্রহণ করেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মুস্তফা কামাল স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: শফিউল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সরকারের উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পীসহ বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, পূর্বের একুশে পদক বিজয়ী ব্যক্তি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ৪৫৭ জন সুধী এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

‘ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সুরক্ষা করতে হবে’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মর্যাদার সাথে দেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে সুরক্ষা এবং চর্চার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আসুন আমাদের মাতৃভূমিকে এমনভাবে গড়ে তুলি যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করতে পারে এবং আমরা এক অনন্য মর্যাদায় চলতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
একুশে পদক বিজয়ীদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকে যারা একুশে পদক পেয়েছেন তারা গুণীজন। তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে কীর্তিমান, তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। সেই অবদানের কথা সবসময়ই আমরা স্মরণ করি এবং আমি মনে করি, আমাদের আগামী দিনের প্রজন্মও তাদের অনুসরণ করে নিজেদের গড়ে তুলবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২১ জনকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক ২০১৯ এ ভূষিত করেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।
এ বছরের একুশে পদক বিজয়ীরা হচ্ছেন : ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু এবং অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম। ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য একুশে পদক পেয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য। পপ শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর) ও নজরুল সঙ্গীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের সাথে এবার সঙ্গীত বিভাগে এ পুরস্কার পান গায়ক সুবীর নন্দী। সুবর্ণা মুস্তাফার সাথে লাকী ইনাম ও লিয়াকত আলী লাকী একুশে পদক পান অভিনয়ের জন্য। দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আলোকচিত্রে অবদানের জন্য এবং চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ চারুকলায় এ পুরস্কার পান। গবেষণায় ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ ও ড. মাহবুবুল হক এবং শিক্ষায় ড. প্রণব কুমার বড়ুয়াকে এ পদক প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া ভাষাসাহিত্যে রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস একুশে পদক পান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন এবং মরণোত্তর একুশে পদক বিজয়ী মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুনের পক্ষে তার মেয়ে বেগম প্রজ্ঞা লাবনী এবং পপ স¤্রাট আজম খানের পক্ষে তার মেয়ে বেগম ইভা খান পুরস্কার গ্রহণ করেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো: শফিউল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ করেন।
পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ৪৫৭ জন সুধী এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement