২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

র‌্যাবের হাতে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা গ্রেফতার

-

‘আপনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত চলছে, চাইলে ফাইল গায়েব ও তথ্য গোপন করার ব্যবস্থা করা হবে। আপনি বাঁচতে চাইলে আমার সাথে যোগাযোগ করেন’। এভাবে প্রতারণার ফাঁদে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করতেন রাজু মিয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাকে মোবাইল ও টেলিফোনে কল করে দুর্নীতির মামলা দায়েরের হুমকি দিয়ে আসছিলেন রাজু মিয়া। ফোনে কথাবার্তায় বোঝার উপায় নেই যে তিনি একজন ভুয়া দুদক কর্মকর্তা। অবশেষে ধরা খেলো র্যাবের হাতে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলের একটি বাড়ি থেকে তাকে আটক করে র্যাব। তিনি গাইবান্ধা সদরের কুটিপাড়ার আজগর আলীর ছেলে। আটককালে রাজু মিয়ার কাছ থেকে চারটি মোবাইলফোন ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত ১২টি সিম উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মোহাম্মদ সাইফুল মালিক জানান, দীর্ঘ দিন ধরে দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করে দুর্নীতির মামলা রুজু হবে বা মামলার তদন্ত চলছে- মর্মে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায় ও হয়রানি করে আসছিলেন রাজু। এতে ভয়ে অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী মামলার ফাইল না চালু করা বা মামলা রুজু না করার অনুরোধ জানান এবং অর্থকড়ি দিয়ে হলেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি বিকাশ নম্বর দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন।
সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাক্সিক্ষত টাকা প্রদান করলে দুর্নীতির মামলার ফাইল খারিজ বা নথিভুক্ত করে দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এভাবে রাজু মিয়া দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে র্যাব মহাপরিচালক বরাবর একটি পত্র পাঠানো হয়। এতে দুদক জানায়, দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরে ফোন করে দুর্নীতির মামলা দায়ের ও মামলার তদন্ত চলছে মর্মে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এরপর র্যাব সদর দফতর বিষয়টি অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র্যাব-২-কে নির্দেশ দেয়। তদন্তে সত্যতার ভিত্তিতে প্রতারক রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
ভুয়া রেজিস্ট্রেশনযুক্ত সিম সংগ্রহ ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে রাজু জানান, তিনি নিজে একজন বিকাশের এজেন্ট ও সিম বিক্রেতা। নিম্নবিত্ত লোকজন, দিনমজুর, গার্মেন্ট কর্মী বা গৃহ পরিচারিকার মতো লোকজন সিম গ্রহণের জন্য তার কাছে এলে তিনি তাদের অগোচরে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে একের অধিক সিম বিক্রি রেজিস্ট্রেশন করে উক্ত সিমের মাধ্যমে বিকাশ হিসাব খুলতেন। মোবাইলফোনে পাল্টা হুমকি পেলে ওই সব সিম তিনি নষ্ট করে ফেলতেন।


আরো সংবাদ



premium cement