২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি আবেদনের শুনানি

নাইকো মামলার পরবর্তী তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি
বেগম খালেদা জিয়ার মামলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ : নয়া দিগন্ত -

রাজধানীর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে নাইকো মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানি হয়েছে। গতকাল সোমবার বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো মামলায় তৃতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে নিজেই শুনানি করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এরপর খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী মো: আসাদুজ্জামান। তাদের শুনানি অসমাপ্ত অবস্থায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়।
নাইকো মামলার শুনানি শুরু হওয়ার আগে গতকাল বেলা ১২টা ২৭ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হুইলচেয়ারে আদালতে আনা হয়। তার দুই পা কোমর পর্যন্ত সাদা কাপড়ে ঢাকা ছিল। খালেদা জিয়া গোলাপি রঙের শাড়ি পরা ছিলেন। আদালতে আনার সময় তার মুখ কিছুটা কাঁপছিল। খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষের নির্ধারিত স্থানে আনার পর সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, আবদুর রেজাক খান, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ উপস্থিত আইনজীবীরা তার সাথে দেখা করেন। এরপর পুলিশ তার চারপাশে দাঁড়িয়ে যায়। তখন আইনজীবীরা তাদের নির্ধারিত স্থানে ফিরে আসেন। বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে আদালত বসেন। কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অভিযোগ গঠন বিষয়ে দীর্ঘ শুনানি শেষে বেলা ১টা ৫৭ মিনিটে কার্যক্রম শেষ হয়। এই দীর্ঘ সময় খালেদা জিয়া আদালতের কার্যক্রম দেখেন। তিনি কোনো কথা বলেননি। এরপর তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে মওদুদ আহমদ মামলার চার্জশিট থেকে পড়েন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নাইকো চুক্তি হয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট নাইকো ও বাপেক্সের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়। তৎকালীন সচিব আকমল হোসেন সুইচ চ্যানেল পদ্ধতি অনুসরণ করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এতে বলা হয়েছে, আমার মতামত নেয়া হয়েছে। সেই মতামত আমাদের সামনে নেই। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট যে সিদ্ধান্ত হয় তাই তৎকালীন আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আপহোল্ড করে। এই চার্জশিটই যথেষ্ট আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অপ্রমাণিত করতে। তিনি বলেন, এটা আমার প্রথম অভিজ্ঞতা যে মতামতকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য হাইপোথিটিক, আইনমন্ত্রী মতামত দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারতেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে পারতেন। এখানে আমি কিভাবে লাভবান হলাম, টাকা পয়সা লেনদেনের কোনো কিছু এখানে নেই। এরপর তিনি উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে বলে শুনানির জন্য সময় প্রার্থনা করলে আদালত সময় দেন।
মওদুদ আহমদের পর জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী মো: আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এই আসামি কোনো বিষয়ে কোনো অপরাধ করেননি। এ জন্য তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত। তিনি বলেন, এ আসামি কারো কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে বা টাকা নিয়েছে এ রকম কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এরপর তিনি বলেন, যে সরকারের সময় নাইকো চুক্তি হয় তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। বর্তমান আসামিদের বিরুদ্ধেও হুবহু একই এফআইআর। একই মামলা হয়। হাইকোর্ট তা বাতিল করেছেন। ৬০ ডিএলআর শেখ হাসিনা ভার্সেস স্টেট বিষয়ে আমি বক্তব্য রাখব। এ জন্য সময় প্রার্থনা করছি। আদালত সময় মঞ্জুর করে ৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
শুনানির সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে আইনজীবী ছিলেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বুরহান উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, মো: আখতারুজ্জামান প্রমুখ। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল।
গত ৩ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বিশেষ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। এরপর ১৩ জানুয়ারি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও অন্যান্য আসামির পক্ষে শুনানি শেষে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি ১১ জন। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেনÑ সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো: শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।


আরো সংবাদ



premium cement
কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’

সকল