২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশে সঠিক নির্বাচন হয়নি : জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের বিশেষ ব্রিফিং -

স্পষ্টতই বাংলাদেশে কোনো সঠিক নির্বাচন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেস। এমতাবস্থায় দেশটির সব রাজনৈতিক পক্ষকে এ বিষয়ে কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ইতিবাচক দিকটি বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর সংলাপে বসার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব।
বাংলাদেশে সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, অনিয়ম আর সার্বিক পরস্থিতি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন আন্থোনিও গুতেরেস।
২০১৯ সালকে সামনে রেখে মহাসচিব গুতেরেসের কর্মপন্থা সম্পর্কে ধারণা দিতে বিশেষ এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরের ব্রিফিং রুমে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশী সাংবাদিক এবং জাতিসঙ্ঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজলকে প্রশ্নের জন্য আহ্বান করলে তিনি জানতে চান, ‘মি: মহাসচিব, আপনি নিশ্চয় জানেন কারচুপি, ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের উপর্যুপরি আক্রমণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বিরোধী দলগুলো নির্বাচনের এই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও যথাযথভাবে বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্ট পরিচালিত ১৭টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়নি ক্ষমতাসীন সরকার। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী? পুরো পরিস্থিতির সার্বিক তদন্তে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আপনি কি বাংলাদেশে বিশেষ কোনো দূত বা দল পাঠাবেন?’
জবাবে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি (সাংবাদিক জামাল খাসগির তদন্তসংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে) আমি এভাবে সরাসরি কোনো তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি না।’
নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট বলে মন্তব্য করে আন্থোনিও গুতেরেস বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন যে সঠিক হয়নি, এ বিষয়টা এখন স্পষ্ট। বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক পক্ষকে আমরা উৎসাহ জানাই তারা যেন এ নিয়ে কার্যকর সংলাপের মধ্য দিয়ে সমাধানের উপায় বের করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের স্বার্থে এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব ইতিবাচক হতে হবে।’
মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অনেক সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের অন্যতম অংশীদার একটি দেশ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কথা উল্লেখ করতে হয়। এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে উদারতা দেখানোর জন্য দেশটির প্রতি আমরা খুবই কৃতজ্ঞ। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ধীর গতিতে হতাশ জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব
আমাদের কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতায় রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ধীর গতির বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে রয়টার্সের সাংবাদিক মহাসচিবের কাছে জানতে চান, সঙ্কট শুরুর দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে ফেরত যায়নি। নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতি মোকাবেলার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির সাথে এ বিষয়ে সর্বশেষ কবে কথা হয়েছে? সু চিকে কী বলেছেন তিনি?
জবাবে মহাসচিব বলেন, সু চির সাথে সর্বশেষ কথা বলার পর বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেছে। আমার কথা সব সময়েই এক। রাখাইনে সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে যতটা সম্ভব পুনরেকত্রীকরণ করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা দিতে হবে। এ জন্য মিয়ানমার সরকারের শক্তিশালী প্রতিশ্রুতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য হলো, পরিস্থিতি যেমন হওয়ার কথা ছিল এখনো তেমন হয়নি। সব কিছু চলছে খুবই ধীর গতিতে। সমস্যার মূল কারণ সমাধানে ব্যর্থ হলে সহিংসতা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি এমনটা আমরা মিয়ানমারে দেখেছি। তাই আমি মিয়ানমারের সাথে সম্পর্কের অগ্রগতিতে ঘাটতি এবং মানুষের দুর্ভোগের জন্য ভীষণ হতাশ। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ অত্যন্ত কঠিন অবস্থার মধ্যে এখন বাংলাদেশে বসবাস করছেন। আমি তাদের ভুলে যেতে পারি না।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করে গুতেরেস বলেন, আমরা চাই এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে যাতে তারা স্বেচ্ছায় ফিরে যান। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের (আইডিপি) সমস্যা সমাধান করতে হবে। আইডিপি সমস্যার বিশ্বাসযোগ্য সমাধান বাংলাদেশের আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
আজ রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রতিবাদ : নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৩৩ জন গ্রেফতার বিপজ্জনক মাত্রার অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি থেকে বাঁচবেন কিভাবে বিয়ের বাজার শেষে বাড়ি ফেরা হলো না চাচা-ভাতিজির প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ভারতীয় ৩ সংস্থার মশলায় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান সাবেক শিবির নেতা সুমনের পিতার মৃত্যুতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের শোক গণকবরে লাশ খুঁজছেন শত শত ফিলিস্তিনি মা ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আলোচনায় নেতাদের ভাই-বোন ও সন্তান সংখ্যা চীনে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা, ঝুঁকিতে ১৩ কোটি মানুষ ভারতের মাঝারি পাল্লার নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা

সকল