২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পরাজয় আড়াল করতেই বিজয় উৎসব : ফখরুল

শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে মাজার জিয়ারত করছেন বিএনপি নেতারা : নয়া দিগন্ত -

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরাজয় আড়াল করতেই ক্ষমতাসীনরা বিজয় উৎসব কর্মসূচি পালন করেছে।
গতকাল শনিবার সকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে ফুল দেয়ার পর আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব নিয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করেছে। তবে বিএনপির অভিযোগ, নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি করে জিতেছে আওয়ামী লীগ। ভোটের ১৯ দিন পর বিজয় উদযাপনে গতকাল বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ জনসভা করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ ডিসেম্বর তো গণতন্ত্রের পরাজয় হয়েছে, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে। কারণ তারা (আওয়ামী লীগ) জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই উৎসব হচ্ছে তাদের (আওয়ামী লীগ) যে পরাজয়, তা ঢেকে দেয়ার জন্য, মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে সরানোর জন্য। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি আওয়ামী লীগের কোনো শ্রদ্ধা নেই। গণতন্ত্র তারা মুখে বলে কিন্তু বিশ্বাস করে না। অতীতে ১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়ে, মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ করে নিয়ে।
দলের প্রতিষ্ঠাতাকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে শপথ নিয়েছি আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, সর্বোপরি যিনি এই স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের পতাকা তুলে নিয়ে কারারুদ্ধ সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে বিএনপি যোগ না দেয়ায় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির কোনো টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের তথ্যের রাজনীতিতে এই ধরনের কথা সব সময় আসে, আর আপনাদের বিভিন্ন রকম চমৎকার চমৎকার তথ্যের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন রকমের স্টোরি আসে। আমাদের মধ্যে কোনো টানাপড়েন নেই। ঐক্যফ্রন্ট আছে, ২০ দলীয় জোট আছে। বিএনপির ভেতরে কোনো টানাপড়েন আছে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো টানাপড়েন নেই। বিএনপি ইউনাউটেড অ্যাজ ইট ইজ।
সকাল সাড়ে ১০টায় জিয়ার মাজারে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও ফাতেহা পাঠ করেন। এ সময় তারা মরহুম নেতার রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন।
এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, শাহজাহান ওমর, রুহুল আলম চৌধুরী, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, ফরহাদ হালিম ডোনার, এ কে এম আজিজুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল হাবিব দুলু, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, কায়সার কামাল, খন্দকার মাশুকুর রহমান, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, দেওয়ান সালাহউদ্দিন, অধ্যক্ষ সোহরাবউদ্দিন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আমিরুল ইসলাম আলিম, হারুনুর রশীদ, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, আবু নাসের মো: রহমাতুল্লাহ অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে নবী উল্লাহ নবী, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এস এম জাহাঙ্গীর, আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, আনোয়ার হোসাইন, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, শাহ নেসারুল হক, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি ছাড়াও যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ড্যাব, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, শ্রমিক দল, ছাত্রদল, ওলামা দল, মুক্তিযোদ্ধা দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদাভাবে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ছাড়াও বেলা ১১টা থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। দলের চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এই ক্যাম্প পরিচালনা করে।

 


আরো সংবাদ



premium cement