২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দেশে ১০ বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৫৫ হাজার

-

দেশে অস্বাভাবিক হারে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৮) কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫৫ হাজার। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার। ২০১৮ সালের জুন শেষে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪ হাজার। এ সময়ে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ বা তিন গুন। তবে কোটিপতির সংখ্যা বাড়লেও ক্ষুদ্র আমনতকারীদের আমানত বাড়েনি বরং তুলনামূলকভাবে কমে গেছে। ২০০৮ সালে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আমানত ছিল মোট আমানতের ৩৬ শতংশ, চলতি বছরের জুন শেষে তা কমে নেমেছে পৌনে ৬ শতাংশে। আর কোটিপতিদের অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ শতাংশ।
বিভিন্ন আকারের আমানতের হিসাব নিয়ে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ প্রতিবেদন তৈরি করেছে গত জুনভিত্তিক পরিসংখ্যান নিয়ে। ওই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ব্যাংকিং খাতে শুধু এক কোটি এক টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার ওপরে মজুদ রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪ হাজার। এসব অ্যাকাউন্টের বিপরীতে অর্থ মজুদ রয়েছে প্রায় চার লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। আর ৭৫ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট আছে আরো ৩৬ হাজার ১৩৩টি। এর বিপরীতে অর্থমজুদ রয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আর ৫০ কোটি টাকার ওপরে ব্যাংকে মজুদ রেখেছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজার চারজন। আর এদের অ্যাকাউন্টে টাকা মজুদ রয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দেড় লাখ কোটি টাকা রয়েছে এক হাজার চারজন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যাই শুধু বাড়েনি, তাদের আকাউন্টে মজুদের পরিমাণও অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত ১০ বছরে কোটিপতিদের অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে মোট আমানতের প্রায় ৪৫ শতাংশ। অথচ ১০ বছর আগে কোটিপতিদের অ্যাকাউন্টে মজুদের পরিমাণ ছিল মোট আমানতের ৩০ শতাংশ।
এ দিকে, কোটিপতি অ্যাকাউন্ট ও তাদের টাকার পরিমাণ বাড়লেও ক্ষুদ্র আমানতকারীদের টাকার পরিমাণ বাড়েনি বরং তুলনামূলকভাবে কমে গেছে। গত জুন শেষে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ রয়েছে মোট আমানতের পৌনে ৬ শতাংশ, যা ২০০৮ সাল শেষে ছিল ৩৬ শতাংশ।
ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আমানতের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে পারছেন না। সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। এর পাশাপাশি বেড়েছে বাসা ভাড়াসহ বিদ্যুতের দাম। সব মিলে জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এর ফলে আগে একই আয় দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য পাওয়া যেত, এখন তা দিয়ে কম পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো হচ্ছে রেশনিং করে অর্থাৎ, কম ব্যয় করে। আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে না পারায় তারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। এতে গরির আরো গরিব হয়ে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সংখ্যা তুলনামূলক না বাড়ায় সম্পদের বণ্টন ঠিকভাবে হচ্ছে না। এতে গরিবরা আরো গরিব হচ্ছে। পাশাপাশি এক শ্রেণীর মানুষ সম্পদশালী হচ্ছে। এর ফলে সমাজে ধনী গরিবের বৈষম্য বেড়ে চলছে। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন, বিগত দুই বছরে ভোগ্যপণ্যের দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মানুষ আয়ের সাথে ব্যয় মেলাতে পারছে না। যে পরিমাণ আয় করছে সংসারের ব্যয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। বাড়তি ব্যয় মেটাতে মানুষ তাদের সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে।
তাদের মতে, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার অর্থই হলো দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়ে গেছে। এ বৈষম্য দূরীকরণের জন্য দারিদ্র বিমোচনমুখী নীতি বেশি করে গ্রহণ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল