১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাঠ দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ

-

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে উত্তাপ ততই বাড়ছে। ভোটের উত্তাপ অনুকূলে নিতে নির্বাচনী মাঠ দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বড় ধরনের সাফল্য পেতেই মূলত ভোটের মাঠ দখলে রাখার বিকল্প কিছু দেখছে না ক্ষমতাসীনেরা। এ জন্য প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোট শেষে ফল গণনা পর্যন্ত সব কিছু এককভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। ইতোমধ্যে কৌশল বাস্তবায়নে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
দলটির সিনিয়র নেতারা মনে করেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে বিএনপি জোট অংশগ্রহণ করায় আগামী নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। নির্বাচনী এ প্রতিযোগিতায় বড় ধরনের সাফল্য পেতে হলে ভোটের মাঠ দখলে রাখার বিকল্প কিছু নেই। নির্বাচন সামনে রেখে মানুষ দুই ধারায় বিভক্ত হয় পড়েছে। এক. আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। দুই. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিরা ক্ষমতায় এলে দেশ অস্থিতিশীলতার দিকে চলে যাবে। উন্নয়নের মহাসড়কের গতি থেমে যাবে। এ জন্য নির্বাচনে ইতিবাচক ফল তুলে আনতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট-মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জোরালো ও ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনী মাঠ দখলে রাখার জন্য বেশ কয়েকটি কৌশল হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে প্রথমত, পুলিশ প্রশাসনকে পুরোদমে কাজে লাগানো হচ্ছে। আসনভিত্তিক বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের অতীতের মামলাগুলো সচল করে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আবার নতুন নতুন মামলা হওয়ায় বিরোধী জোটের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার ও হয়রানির আতঙ্কে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। গতকাল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন নোয়াখালীতে তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ চালাতে গেলে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের নির্বাচন সামনে রেখে সক্রিয় করা হয়েছে। বিশেষ করে এমপির বলয়ের লোকজন বিভিন্ন আসনে ব্যাপক সক্রিয় ও মারমুখী হয়ে উঠেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বা তাদের পক্ষে কোনো নেতাকর্মী প্রচারে নামলে ভয়ভীতি দেখিয়ে, আতঙ্ক সৃষ্টি করে, এমনকি অতর্কিত হামলা চালিয়ে নির্বাচনী মাঠ থেকে উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এর আলামত পাওয়া গেছে গত শুক্রবার অতর্কিতে হামলা চালিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়ি ভাঙচুর করে। এর আগে প্রতীক পাওয়ার পরই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা তাদের আসনে প্রচার চালাতে গেলেই অর্ধশতাধিক জায়গায় সরকারি দলের লোকজন হামলা চালায় ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এরকম কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার মাধ্যমেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নির্বাচনী কর্মযজ্ঞ সেরে নিতে চাইছে ক্ষমতাসীনরা। তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মাঠে না থাকলে সরকারি দলের প্রার্থীরা প্রচারণার সুযোগ বেশি পাবে। ভোটারদের আকৃষ্ট করাটাও খুব সহজ হয়ে যাবে। এতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট-মহাজোটের প্রার্থীরা খুব সহজেই বৈতরণী পার হতে পারবেন। এই সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এ জন্য শক্তভাবে নির্বাচনী মাঠে অবস্থান করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
গত সন্ধ্যায় হাটখোলা এলাকায় ঢাকা-৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সুব্রত চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল পটুয়াখালীর গলাচিপায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনির স্ত্রী লিফলেট নিয়ে প্রচার চালাতে গেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। গোলাম মাওলা রনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে, হামলা-মামলা করে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে মাঠে নামতেই দিচ্ছেন না। প্রার্থীর পক্ষেও যদি কেউ প্রচার চালাতে যাচ্ছে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে, হেনস্থা করা হচ্ছে। এটা নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না।
নির্বাচনী মাঠ দখলে রাখলে আগামী নির্বাচনে জয় নিশ্চিত হবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, দেশের মানুষ দুই ধারায় বিভক্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক শক্তি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ, আর সাম্প্রদায়িক স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে একত্র হয়েছে। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক শুভ শক্তির কাছে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি পরাজিত হবেই।
সম্প্রতি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আপনারা এলাকায় প্রস্তুত থাকবেন, যেন বিএনপি মাঠে নামতে না পারে। ওদের মাঠে প্রতিহত করবেন, রাস্তায় প্রতিহত করবেন। চক্রান্তকারীরা নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা দেখবো কারা মাঠে নামবে আর কে নামবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে কলুষিত করার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির নষ্ট রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আগামী ৩০ ডিসেম্বর উপযুক্ত জবাব দেবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২

সকল