২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাশরাফির ২০০তম ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে জয়ের পর মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের উল্লাস :এএফপি -

মাশরাফির ম্যাচই তো! যে ম্যাচে ২০০তম ওয়ানডে পূর্ণ হলো। যে ম্যাচের সেরা পারফরমারও তিনি। যে ম্যাচে তার চমৎকার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ জিতেছে। সে ম্যাচও যে মাশরাফিরই। রাজনীতির মাঠ গরম করে খেলার মাঠে ফেরা এ ক্রিকেটার তার দেয়া প্রতিশ্রতি রেখেছেন। বলেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ পর্যন্ত খেলা নিয়েই ভাববেন। এরপর নির্বাচন। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সে প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রথম ধাপ পেরিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে, ৮৯ বল হাতে রেখে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতেও কেন প্রথম ব্যাটিং করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এ বিতর্ক ম্যাচ শেষেও ছিল। শেরেবাংলায় দিবা-রাত্রির ম্যাচে চেজিংয়ে স্বস্তি! এমন এক রেওয়াজ রয়েছে। তার পক্ষে যুক্তিও আছে। শীতের দিনে বিকেল হলেই যেখানে শিশিরের প্রকোপ। তেমন মাঠে বোলারদের বল গ্রিপে সমস্যা থাকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজও জানে এটি। তবু কোনো প্লান ছিল কি না তাদের, সেটি কে জানে! পেস অ্যাটাকের বিপক্ষে বাংলাদেশের একটা দুর্বলতা তো আছেই। সেটা দিয়ে প্রেসার দিতে চেয়েছিল কি না সেটি বোঝা গেল না! কারণ ম্যাচটি মূলত ক্যারিবিয়ানদের জন্যই যখন সাদামাটাতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল, তখন এমন কথাগুলো ওঠাই তো স্বাভাবিক। আজকাল ১৯৫ রান করে কী ওয়ানডে ম্যাচ জেতা যায়। বিকেএসপিতে প্রস্তুতি ম্যাচেও ৩৩১ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর পরও হারতে হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশকে কিভাবে তারা চাপে ফেলবে ওই রান দিয়ে। হয়ওনি। সহজে এক জয় দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০-তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকেরা।
টেস্ট সিরিজে ২-০ বাংলাদেশের জয়ের পর ওয়ানডে জমবে ছিল প্রত্যাশা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সিরিজে হারানোর সে ম্যাচে ১৮ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ সেন্ট কিটসে। জয়ের সে ধারা অব্যাহত রাখলেন মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকরা। প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা স্বভাবসুলভ দানবীয় ব্যাটিং করতে চেয়েছিল। কিন্তু উইকেট তো সে ধরনের ব্যাটিং সাপোর্ট দিচ্ছিল না। প্রথম ব্যাটিং করা যে মস্তভুল সিদ্ধান্ত ছিল, সেটা তখনই টের পেয়ে গেছে। কিন্তু কী হবে। সেটা তো আর শুধরে নেয়া সম্ভব ছিল না। ফলে সাদামাটা একটা স্কোরেই থামতে হয়েছে। নতুবা ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৫। এটি কি কোনো চ্যালেঞ্জিং রান? ইনিংসে একটাও ছিল না হাফ সেঞ্চুরিও। অবশ্য থাকবেই বা কিভাবে। বাংলাদেশ এ দিন সূচনা করেছিল স্পিন অ্যাটাক দিয়ে। এক প্রান্তে মেহেদি অন্য প্রান্তে সাকিব। এটি হয়তো চিন্তার বাইরে ছিল দুই ওপেনার শাই হোপ ও কাইরন পাওয়েলের। ২৯ রানেই বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছে সাকিবের বলে। এরপর মাশরাফি, রুবেল, মুস্তাফিজ। এ তিন পেসারের অ্যাটাক। বাংলাদেশের বোলারদের এমন পরিবর্তনে তাদের সাজানো ‘ছক’ সম্ভবত এলোমেলো হয়ে যায়। কারণ উইকেট পতন হতে থাকে নিয়মিত। রানও নিতে পারছিলেন না তারা সেভাবে। মারতে গেলেই আউট। পতনকৃত ৯ উইকেটের সাতটিই নেন পেসাররা। তিনটি করে মুস্তাফিজ ও মাশরাফি। বাকিটা রুবেল। শেষ পর্যন্ত ইনিংস শেষ ওই রানে। ইনিংসের সর্বোচ্চ রান আসে ওপেনার শাই হোপের ব্যাট থেকে ৪৩। এ ছাড়া কেমো পলের ৩৬, রোস্টন চেজের ৩২ উল্লেখযোগ্য। মাশরাফি ৩ উইকেট নেন ৩০ রানে।
এরপর সহজ টার্গেট সামনে রেখে খেলতে নেমে তামিম ও লিটন স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেননি। লিটন একবার আউট হয়েও বেঁচে যান ‘নো’ বলের কারণে। তামিম আউট হন প্রথম। লিটন শেষ পর্যন্ত ৪১ করে আউট হয়েছিলেন। পরে মুশফিক নেমে দায়িত্ব নিয়ে খেলে মূলত দলকে নিয়ে যান জয়ের মার্কে। ৪ নম্বরে নেমে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে অপরাজিত থেকে দলকে নিয়ে যান জয়ের লক্ষ্যে। ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন ৭০ বল খেলে। এ ছাড়া সাকিবের ৩০ রান উল্লেখযোগ্য। এ দুই ব্যাটসম্যান মূলত ৫৭ রানের পার্টনারশিপ ম্যাচে জয়ের লক্ষ্যে যাওয়ার পথ মসৃণ করে দেয়। কেমার রোচ নিয়েছেন দুই উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৯৫/৯ (৫০ ওভার), বাংলাদেশ : ১৯৬/৫ (৩৫.১ ওভার)
ফল : বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।


আরো সংবাদ



premium cement