১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভোট টানতেই ধানের শীষে ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি জোট

প্রতিটি দল পৃথকভাবে প্রার্থী তালিকা তৈরি করছে, ২১ নভেম্বরের পর আসন বণ্টনের ফয়সালা
-

ধানের শীষ ও নৌকা। বাংলাদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে পরিচিত ও সমাদৃত দুইটি প্রতীক। ধানের শীষ বিএনপির প্রতীক। আসন্ন নির্বাচনে এই প্রতীকে কেবল বিএনপিই নয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নিবন্ধিত দলগুলোও নির্বাচন করবে। এই দুই জোটে থাকা অনিবন্ধিত বেশ কয়েকটি দলও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম বড় শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্বতন্ত্র প্রতীক না ধানের শীষে নির্বাচন করবে তা এখনো চূড়ান্ত নয়। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে শিগগিরই তারা বিএনপিকে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ভাবছে।
জানা গেছে, ভোটার টানতে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফল ঘরে তুলতেই জোট ও ফ্রন্টভুক্ত দলগুলো প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ বেছে নিয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তারা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নাকি একক কোনো প্রতীকে নির্বাচন করবেন তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে আলোচনা করেছেন। সবাই মিলে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর কারণ হলোÑ ধানের শীষ জনপ্রিয় প্রতীক। নির্বাচনের মাঠে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা। সে ক্ষেত্রে ধানের শীষই হচ্ছে একমাত্র প্রতীক যার ভিত্তিতে নৌকা প্রতীককে চ্যালেঞ্জ জানানো সম্ভব। ওই নেতা আরো বলেন, ফ্রন্ট বা জোটভুক্ত অনেক দলের প্রতীক সাধারণ ভোটারের কাছে অপরিচিত কিংবা তেমন জনপ্রিয় নয় বলে বাস্তব কারণেই ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং বিএনপি নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করতে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণার আগেই ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ইসিকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে তাদের আটটি নিবন্ধিত দলের প্রতীক হবে ধানের শীষ। এই দলগুলো হলোÑ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্ট (বিজেপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক দল (জাগপা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। পরে ঐক্যফ্রন্টভুক্ত তিনটি নিবন্ধিত দলও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়েছে। এই তিনটি দল হলোÑ ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। এই ১১টি দলের বাইরে নিবন্ধন না থাকা আরো ১০টি দলও ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে ঐক্যফ্রন্টের শরিক মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং অধ্যাপক নূরুল আমিন ব্যাপারীর বিকল্পধারা বাংলাদেশ। এ ছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টিসহ (কাজী জাফর) আরো কয়েকটি দল ধানের শীষ প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। জামায়াতে ইসলামীর প্রতীকের বিষয়ে দলটির নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরোয়ার নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রতীকের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ধানের শীষ অথবা স্বতন্ত্র প্রতীক দুইটি অপশন নিয়েই তারা চিন্তাভাবনা করছেন। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আসন বণ্টনে ছাড় দেবে বিএনপি : ২০ দলীয় জোট ও ফ্রন্টকে কত আসন দেয়া হবে তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। দলটির সিনিয়র নেতাদের প্রাথমিক আলোচনায় কেউ কেউ ৮০টি আসন ছেড়ে দেয়ার পক্ষে মত দেন। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটকে ৪০টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ৪০টি আসন ছেড়ে দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকরা চায় অন্তত দেড় শ’ আসন। এর মধ্যে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী চায় অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি আসন। এলডিপি ও খেলাফত মজলিস ৩০টি করে আসন চায়। জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ১৬, কল্যাণ পার্টি ১২, বিজেপি ৩, জমিয়ত ৬ এবং লেবার পার্টি ২টি আসন চায়।
অন্য দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চায় প্রায় ১০০ আসন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম এরই মধ্যে শতাধিক নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তবে এর মধ্যে ড. কামাল হোসেন নিজে নির্বাচন করছেন না। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিও দেড় শতাধিক আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ৫০টির মতো আসন চাইতে পারে গণফোরাম। নাগরিক ঐক্য থেকেও ৪০টি আসন চাওয়া হতে পারে। একইভাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১০টির বেশি আসন চাইবে বিএনপির কাছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেছেন, আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জোট ও ফ্রন্টের সাথে আসন বণ্টন নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। শিগগিরই আমরা এ বিষয়ে বসব। তবে আসন বণ্টন নিয়ে কোনো জটিলতা হবে না। জানা গেছে, আসন বণ্টনের এই জটিল কাজটির সুরাহা করতে ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলোর দু’জন করে প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে তার আগে প্রতিটি দলকে নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। বাস্তবতা ও প্রার্থীর জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে। ২০ দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোকেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে। গুলশান কার্যালয় থেকে জোটের শরিকরা নিজ নিজ দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে তা জমা দিচ্ছেন। ২১ নভেম্বর জোটের পরবর্তী বৈঠকে দলগুলোর প্রার্থী তালিকা নিয়ে আলোচনা হবে। জোটের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান নয়া দিগন্তকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার জোটের বৈঠক থেকে তাদের আসন বণ্টনের বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছেÑ সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিল বকেয়া পরিশোধ করার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে, তা হালনাগাদ করতে। তিনি বলেন, জোটের শরিকরা গুলশান কার্যালয় থেকে ফরম নিয়ে তা পূরণ করে জমা দিচ্ছে। যোগ্যদেরই কেবল চূড়ান্ত করা হবে বলে ওই বৈঠকে জানানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
এ দেশের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে : ডাঃ শফিকুর রহমান পিছিয়েছে ডি মারিয়ার বাংলাদেশে আসার সময় ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

সকল