ঢাকা টেস্ট জয়ে সিরিজ ড্র
- মাসউদুর রহমান
- ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
শেরেবাংলায় টেস্ট সিরিজের ট্রফিটি যখন ভাগাভাগি হচ্ছিল, তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল চট্টগ্রামে। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে চোখ রাঙাবে না, তারই বা কী গ্যারান্টি। ওই দলটির বিপক্ষে আগের সিরিজে যে বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল, সেখান থেকে কতটা উত্তরণ ঘটানো গেল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সেটিই এখন আলোচনায়। ২২ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে কী ঘটতে পারেÑ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সে উত্তরও দিতে হয়েছে। মাহমুদুল্লাহ কিছুটা হলেও শুনিয়েছেন আশার বাণী। ‘ক্যারিবিয়ান কন্ডিশন আর আমাদের কন্ডিশন তো এক না। ওদের আগুয়ান বোলাররা অতটা হয়তো পারবেন না। আমরাও প্রথম টেস্টে ডিসিপ্লিনের ঘাটতির জন্য না পারলেও এ ম্যাচে কামব্যাক করেছি।’ সাংবাদিকদের কেউ একজন বলেছিলেনÑ ঢাকা টেস্ট তো সহজেই জিতলেন! মাহমুদুল্লাহ অনেকটা হুঙ্কার দিয়েই উঠলেন কিভাবে? পাঁচ দিনই তো খেলতে হলো। মুমিনুলের ১৬১, মুশফিকের ডাবল, তাইজুল মিরাজের ওই বোলিং, আমিও কিছুটা (১০১) কন্ট্রিবিউট করেছি। ফলে পরিশ্রম করেই এ ম্যাচে জিতেছি আমরা।’ মাহমুদুল্লাহর কথাই সত্যি। সিলেট টেস্টে সাড়ে তিন দিনে হেরেছে বাংলাদেশ। খুব বাজে অভিজ্ঞতা। টানা চার টেস্টে ২০০ রানই করতে পারছিল না যে দলটি সে দল যখন ঢাকা টেস্টে পঞ্চম দিনে এসে জয় তুলে নিয়েছে ২১৮ রানের বড় ব্যবধানে, এটি স্বস্তির। শুধু মাহমুদুল্লাহ কেন? টিম বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেটের জন্যও স্বস্তির জয়। এর পরও যে কথাটা উঠে আসবে সেটি হলো লজ্জার এক কথা। জিম্বাবুয়ে এখন সে মানের ক্রিকেট খেলে না। সে দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট পারফরম্যান্স হতাশামুক্ত হওয়া যায় না। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন ঘরের মাঠে এসে দাঁড়িয়ে। এমন পারফরম্যান্স দিয়ে মোটেও আশাব্যঞ্জক কিছু প্রত্যাশা করা যাবে বলে মনে হয় না। এখনো টপ অর্ডার নিয়ে রয়ে গেছে ঝামেলা। অনেক চেষ্টা ছিল এ সিরিজে। হয়নি। বোলিংয়েও জিম্বাবুয়ের ২০ উইকেট নিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এ টেস্টে যদি টসে জিতে জিম্বাবুয়ে প্রথম ব্যাটিং করতেন তাহলে যে কী ঘটত সেটি অনুমান করলেও গা শিউরে উঠবে! সবশেষ। জয় এসেছে। রান এসেছে। বোলাররাও উইকেট পেয়েছেন। স্বস্তির একটা সিরিজ শেষ হলো এটিই মূলত তৃপ্তি। এখান থেকে নতুন যাত্রা শুরুর চেষ্টা থাকবে এটি বলে দেয়া যায় অনায়াসে।
ঢাকা টেস্টের কাল শেষ দিনে আসলেই কিছু ছিল না। আগের দিন মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছিলেন, চতুর্থ ইনিংসে অলআউট করতে একটা দলকে চার সেশন যথেষ্ট সময়। কাল লাঞ্চের পর ৮৭ মিনিটের মতো খেলেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর অলআউট। বাংলাদেশ যখন ২২৪ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল, তখন জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৪৪৩। চার সেশনে এত রান করা তাও শেষ তিন সেশন পঞ্চম দিনে। জিম্বাবুয়ে সেখানেই হেরে গিয়েছিল। এরপর চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে হারিয়ে ফেলেছিল তাদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারিকে। দুই ওপেনারকে হারিয়ে গতকাল পঞ্চম দিনে নেমে মূলত ব্রেন্ডন টেইলরের সেঞ্চুরির দিকেই ফোকাস ছিল। বাংলাদেশের বোলাররাও পরিশ্রম করে গেছেন। তারাও যতক্ষণ টিকে থাকা যায়, ব্যাটিং প্র্যাকটিসটা হয় ওই মনভাবে খেলে গেছে। লাঞ্চ বিরতির আগে হারিয়ে ফেলে তারা আরো ২ উইকেট যথাক্রমে শেন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজাকে। দলের রান ছিল ১৬১/৪। লাঞ্চের পর খেলতে নেমে টেইলর পিটারমুর বেশিক্ষণ টেকেননি। ১৮৬ রানে মুর আউট। এরপর ধারাবাহিক আউটের ফাঁকে টেইলরের সেঞ্চুরিটাই প্রাপ্তি জিম্বাবুয়ের। ১০৬ রান করে অপরাজিতই থাকেন। কিন্তু তাকে আর সাপোর্ট দিতে পারেননি কেউ। ২৩০ মিনিট ক্রিজে থেকে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির কৃতিত্ব নিলেন এ মিডল অর্ডার। ফলে শেষ হয় তাদের ইনিংস ২২৪ রানে। ৮৩.১ ওভারে ওই রান করেছিলেন তারা। এ ইনিংসে মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন ৫ উইকেট। তাইজুল নিয়েছেন ২ উইকেট। বাকিটা মোস্তাফিজ। তবে খালিদ তার অভিষেকে উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেছেন। ক্যাচ ড্রপ না হলে উইকেটশূন্য থাকতেন না তিনি। মুশফিকুর রহীম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেলেও তাইজুল ইসলাম লাভ করেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
বাংলাদেশ : ৫২২/৭ ডি. ও ২২৪/৬ ডি.
জিম্বাবুয়ে : ৩০৪ ও ২২৪
ফল : বাংলাদেশ ২১৮ রানে জয়ী।
সিরিজ : ১-১ ড্র।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা