নয়াপল্টন এলাকা জনসমুদ্র

দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নেতাকর্মীদের আগমনে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয় গতকাল। ধানের শীষের ছড়া নিয়ে আসা নেতাকর্মীদের হাতে ছিল বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। তারা বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেনÑ ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, দেশনেত্রীর মুক্তি চাই, আমার নেত্রী আমার মা, বন্দী থাকতে দেবো না ইত্যাদি।’ গতকাল দ্বিতীয় দিনে সকাল ১০টা থেকে দলের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হলেও নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেন ৮টা থেকেই। সাড়ে ৯টার পর ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় পর্যন্ত মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা ও কর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। তারা মিছিল নিয়ে গতকাল দিনভর ব্যাপক শোডাউন দিয়েছেন। ব্যান্ড দলের পাশাপাশি দু’জন নেতা দু’টি হাতি নিয়ে মনোনয়ন ফরম কিনতে আসেন দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে। নয়াপল্টন সড়কের দুই পাশে গলিসমূহ ও বিপণিবিতানগুলোয়ও নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে। লোকসমাগম বেশি হওয়ায় একপর্যায়ে কিছুক্ষণের জন্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিশাল মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে আসতে থাকেন। নেতাকর্মীদের ঢল দেখলে মনে হবে যেন রাজধানীর সব পথ মিলেছে নয়াপল্টনে। এতই মানুষ যে ভিড় সামলে মনোনয়নপত্র কিনতে অনেককেই হিমশিম খেতে হয়। প্রচণ্ড হুড়োহুড়িতে বেশ কয়েকজন আহত হলে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫ হাজার টাকায় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হচ্ছে। জমা দেয়ার সময়ে জামানত হিসেবে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। মঙ্গলবার থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমা দেয়া যাবে। ধানের শীষ প্রতীক পেতে মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকে সকাল থেকে তাদের ফরম জমা দিতে শুরু করেন। গত সোমবার দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনের জন্য ফরম কিনে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে বিএনপি। গতকাল দ্বিতীয় দিনে ১৮৯৬ টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তির যে উত্থান ঘটেছে, আজকে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে আসা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের জন¯্রােত তারই প্রমাণ। মানুষের তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। চরম কষ্ট করে নেতৃবৃন্দ তাদের কর্মীদের নিয়ে ফরম সংগ্রহ করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে। সংবাদকর্মীদেরও ভিড় ঠেলে কার্যালয়ে উঠতে চরম বেগ পেতে হয়। নেতাকর্মীরাও সিঁড়িতে ঠাসা লাইনের মধ্যে বিকেলেও ফরম সংগ্রহ করেন।
গতকাল যারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তাদের অন্যতম হলেন: স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লা-১ ও ২, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ), ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ কুমিল্লা-৫, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে কুমিল্লা-৬ ও ১০, আবদুল আউয়াল মিন্টু ফেনী-৩, ভিপি জয়নাল আবেদীন ফেনী-২, সেলিমা রহমান বরিশাল-৩, আলতাফ হোসেন চৌধুরী পটুয়াখালী-১, শাহজাহান ওমর ঝালকাঠি-১, মরহুম আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান গাজীপুর-৪, গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং প্রবীণ শ্রমিক নেতা ও মহানগর সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর-২, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন গাজীপুর-৩, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছাইয়েদ্যুল আলম বাবুল ও কালিয়াকৈরের মেয়র মজিবুর রহমান গাজীপুর-১, জেলা বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন সবুজ গাজীপুর-৫, শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও শিল্পপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান মাদারীপুর-১, দিনাজপুর জেলা যুবদলের সহসভাপতি ও শিল্পপতি মো: মেহেদী হাসান সুমন দিনাজপুর-১, বিএনপির আইনসম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নেত্রকোনা-১, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা: আনোয়ারুল হক নেত্রকোনা-২, আরিফা জেসমিন নাহিন নেত্রকোনা-২, মালয়েশিয়া বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক মামুন বিন আব্দুল মান্নান ময়মনসিংহ-৯, বিএনপির সহদফতর সম্পাদক মো: মুনির হোসেন পটুয়াখালী-২, হাসান মামুন পটুয়াখালী-৩, ছাত্রদলের সাবেক নেতা শহীদুল্লাহ ইমরান নেত্রকোনা-৫, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী হেলেন জেরিন খান ঢাকা-১৩, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোর-৩, অমলেন্দু দাশ অপু যশোর-৬, আজিজুল বারী হেলাল খুলনা-৪, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল নেত্রকোনা-৩, রাকিবুল করিম খান পাপ্পু সিরাজগঞ্জ-৫, ফয়সাল আলীম জয়পুরহাট-১, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান নরসিংদী-৩, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল নরসিংদী-৪, বিএনপির জলবায়ুবিষয়ক সহসম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল জামালপুর-৩, বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক ঢাকা-১৪ ও ১৬ এবং অধ্য সেলিম ভুঁইয়া ঢাকা-৪, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু চুয়াডাঙ্গা-১, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার ঢাকা-১৭, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোনা-৪, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ঝিনাইদহ-৪, ওয়াহিদ ইমতিয়াজ বকুল নারায়ণগঞ্জ-৩, এ বি এম ওয়ালিউর রহমান নারায়ণগঞ্জ-৩, আব্দুল মোনায়েম লিলি ঢাকা-৭, রুহুল আমিন আকিল কিশোরগঞ্জ-২, ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ ও নাসিমা আক্তার কল্পনা ঢাকা-৭, নারী নেত্রী মাহবুবা হাবিবা রাজশাহী-৫, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু ঢাকা-৪, রফিক আহমেদ ডলার ঢাকা-৭, কাদের গনি চৌধুরী চট্টগ্রাম-২, নাজমুল মোস্তফা আমিন চট্টগ্রাম-৫, রফিক হেলালী নেত্রকোনা-৩, হাসান বিন সোহাগ নেত্রকোনা-৩, আকবর হোসেন খন্দকার মানিকগঞ্জ-১, সালাহউদ্দিন আহমেদ ঢাকা-৫, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক ঢাকা-১, সাবেক ছাত্রনেতা বেনজীর আহমেদ টিটো টাঙ্গাইল-৪, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো: শরীফুল আলম কিশোরগঞ্জ-৬, নাছির উদ্দিন হাজারী ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৪, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ঢাকা-৮, তানভীর আহমেদ রবীন ঢাকা-৪, শহীদুল ইসলাম বাবুল ফরিদপুর-২, দুলাল হোসেন বরিশাল-২, এম এ মতিন নওগাঁ-৬, হায়দার আলী লেলিন ভোলা সদর, সিলেট-২ তাহসিনা রুশদীর লুনা, শফিউল বারী বাবু লক্ষ্মীপুর-৪, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দীপু ও মো: দুলাল নারায়ণগঞ্জ-১, আবুল হোসেন বরিশাল-৬, ফিরোজ হায়দার খান টাঙ্গাইল-৭, লুৎফর রহমান মতিন টাঙ্গাইল-৪, প্রকৌশলী মো: ফখরুল আলম চট্টগ্রাম-১, হাজী মো: লিটন ঢাকা-৬, জানে আলম খোকা বগুড়া-৫, মুসলিম উদ্দীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, যুবদলের সাবেক নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক মুন্সীগঞ্জ-৩ ও ঢাকা-৪, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ময়মনসিংহ-১০, খালেদ মাহমুদ শ্যামল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, সাখাওয়াত হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৫, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সম্পাদক মো: মাইনুল ইসলাম টাঙ্গাইল-৩, বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন মুন্সীগঞ্জ-৩, শ্রমিক দলের সভাপতি মো: আনোয়ার হোসাইন চট্টগ্রাম-২, ব্যবসায়ী শাহীদুল ইসলাম চট্টগ্রাম-১, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা-১৮, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মোল্লা কুমিল্লা-২, সাবেক এমপি রাশিদুজ্জামান মিল্লাত জামালপুর-১, ছাত্রদলের ইশতিয়াক হোসেন নাসির কিশোরগঞ্জ-৫, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ময়মনসিংহ-৪, ডা: মাইনুল হাসান সাদিক গাইবান্ধা-৩, মো: সিরাজুল ইসলাম যশোর-২, মো: শাহরিয়ার আলম নড়াইল-২, সাবেক মন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন নাটোর-১, সাবেক ছাত্রনেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি যশোর-৫, কৃষকদলের নেতা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মাগুরা-২, মনিরুল ইসলাম সোহাগ পিরোজপুর-২, পারভেজ আহমেদ নারায়ণগঞ্জ-৪, মাহমুদুর রহমান সুমন নারায়ণগঞ্জ-২, মামুনুর রশীদ মামুন নোয়াখালী-১, ডা: এম এ মতিনের ছেলে ডা: এম এ মুহিত সিরাজগঞ্জ-৬, এম এ হান্নান চাঁদপুর-৪ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।