২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পঞ্চদশ সংশোধনীর আগের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে : ড. কামাল

পদ-পদবি নয়, ঐক্যফ্রন্ট করেছি দেশের স্বার্থে ; ৭ দফা ঠিক হয়েছে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ; বিএনপির সাথে জোট করেছি নির্বাচনের জন্য
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ড. কামাল হোসেন : নয়া দিগন্ত -

গণফোরাম সভাপতি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বর্তমান সংবিধান সংশোধিত। এই সরকার সংশোধন করেছে। আমরা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন দাবি করছি না। আমাদের দাবি, পঞ্চদশ সংশোধনীর আগে সংবিধান যে অবস্থায় ছিল সরকারকে সেই অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন, কোনো পদ-পদবির জন্য নয়, আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি দেশের স্বার্থে এবং ফ্রন্টের ৭ দফা নির্ধারণ করা হয়েছে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে। বিএনপিকে সাথে নিয়ে গঠন করা এ জোট কেবলই নির্বাচনী জোট বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। দলের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত রায় চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। জনমত গড়তে আজ সিলেট এবং এরপর চট্টগ্রাম ও রাজশাহী যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো পদ-পদবি চাই না। আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীও হতে চাই না। আমি এসবের পেছনে ছুটছি না। কোনো কিছু পাওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করিনি, করেছি দেশের স্বার্থে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং দেশের নাগরিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
তিনি বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। অথচ আমাদের এই ৭ দফা দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছেছি, যার ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার পুনরুল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া, মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাহী বিভাগ, সরকার গঠন, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, বাকস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা, জনগণের আস্থা আছে এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করাÑ এই ৭টি দাবি সরকারের কাছে আমরা করে আসছি। এই দাবি মেনে নেয়া হবে সরকারের শুভ বুদ্ধির পরিচয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সম্পর্কে ড. কামাল বলেন, আমরা সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জনমত গঠনকে গুরুত্ব দিচ্ছি। অবাধ নির্বাচনের জন্য সব নাগরিক যেমন অবদান রাখতে পারে, সেটাই আমরা তুলে ধরবো। সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম সুষ্ঠু নির্বাচনে ভূমিকা রাখবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, জনমত গড়তে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সিলেট যাবো। তারপর চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা সফর করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। দলীয়ভাবে বিএনপি আমাদের জোটে আছে। এটা শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি জোট। এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেন ড. কামাল।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে একটি সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে। ওখানে আপনারও মতামত ছিল। এখন কেন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের কথা বলছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের সততা-নিরপেক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে, সে জন্যই এই দাবি।

 


আরো সংবাদ



premium cement