২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

উত্তেজনাকর ম্যাচে বাংলাদেশ হারাল আফগানিস্তানকে

-

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ে যে বাধা ছিল, তা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। দেরাদুনে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের পর এশিয়া কাপের গ্রুপ ম্যাচেও জয়লাভ সম্ভব হয়নি। কাল আবুধাবিতে সুপার ফোরের ম্যাচে শেষ ওভারে মুস্তাফিজের চমকপ্রদ বোলিংয়ের সুবাদে ৩ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য আফগানদের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। কিন্তু মুস্তাফিজ তার বোলিং কারিশমায় প্রথম বলে ২ রান দেয়ার পর দ্বিতীয় বলে ডেঞ্জার রশিদ খানকে আউট করেন। পরের দুই বলে কোনো রান নিতে পারেনি আফগান ব্যাটসম্যানেরা, উপরন্তু রানআউটের চান্স ছিল তা মিস হয়েছে। পঞ্চম বলে এক রান নিলেও শেষ বলে জয় পেতে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৪। কিন্তু ব্যাটে বলে করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় তারা ম্যাচে। তবে এশিয়া কাপের আফগানদের সাথে দ্বিতীয় ম্যাচেও জিততে এতটা ধকল পোহাতে হবে তা কল্পনাতীত। জয় দিয়ে বাধা অতিক্রম করা গেলেও এখনো আফগানদের নিয়ে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হবে তা এ ম্যাচে প্রমাণিত হয়ে গেছে। হারলেও আফগানরা সাহসিকতার যে পরিচয় দিয়েছেন তারা, সত্যিই তা প্রশংসার দাবিদার। এ ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। বাংলাদেশ ইনিংসেও উইকেট পতন, টেনশন পেরিয়ে চ্যালেঞ্জিং (২৪৯) একটা স্কোর সংগ্রহে আফগানরা বেশ দায়িত্ব নিয়েই ব্যাটিং করেন। কিন্তু সাকিব ও মুস্তাফিজ বেশ বুঝে শুনেই বোলিং করছিলেন। জয়ও সম্ভব হয়েছে এ দুই বোলারের নিখুঁত বোলিংয়ের সুবাদে। শেষ চার ওভারে ৪২ প্রয়োজন ছিল। সেখান থেকে ক্যালকুলেটর টিপেই যেন খেলছিলেন মোহাম্মাদ নবি, সামিউল্লাহ। সামি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানেরা আর দাঁড়াতে পারেনি সাকিব, মাশরাফি, মুস্তাফিজের সামনে। মাশরাফি ও মুস্তাফিজ নেন দু’টি করে উইকেট। সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ নিয়েছেন একটি করে। হাসমুতুল্লøাহ করেন সর্বাধিক ৭১। এ ছাড়া শেহজাদ ৫৩, আসগর ৩৯ ও নবি করেন ৩৮ রান। এর আগে প্রথম ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এ দিনও বেশ অগোছালো মনে হয়েছে। বিশেষ করে যে ব্যাটসম্যানেরা দলের স্কোর চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে নিয়ে যান, তারা যেন আফগান স্পিনার রশিদ খানের ভয়ে ছিল তটস্থ। রশিদ প্রথম স্পেলে যখন বোলিং করতে আসেন। ঠিক তখনই যেন এলোমেলো হয় ইনিংস। হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা লিটন দাস আউটের পর, সাকিব নেমেই রানআউট। কিছুক্ষণ পর ওই রানআউট হন মুশফিকও। দলীয় ৮১ রানে প্রথম দু’জন আউটের পর ৮৭ রানে মুশফিক। দলের রান দাঁড়ায় ২০.৫ ওভারে ৮৭, ৫ উইকেট। দলের এ অবস্থার উন্নতি করবেন কে? তাহলে আবারো কি বিপর্যয় আফগানদের সামনে? কিন্তু আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যস্ত অবস্থার উন্নতির জন্য ঢাকা থেকে উড়িয়ে নেয়া সৌম্য ও ইমরুলের মধ্যে ইমরুলকে নামানো হয় এ ম্যাচে কঠোর সমালোচনার মধ্যে। সেই ইমরুলই তার অভিজ্ঞতার আলোকে দায়িত্ব নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সাথে। মিডল অর্ডারে ভালো ইনিংস খেলে দলকে বিপদমুক্ত করার অভ্যাস মাহমুদুল্লøাহর নতুন নয়। এ দিনও তেমনই এক ইনিংস খেলেন এ ব্যাটসম্যান। ১২৮ রানের এক মূল্যবান পার্টনারশিপ খেলেন তিনি ইমরুল কায়েসকে নিয়ে। ৪৪.২ ওভারে দলীয় রান তারা পার করেন ২০০। মাহমুদুল্লাহ রশিদ খানকে ছক্কা হাঁকিয়েও ওই পর্যায়ে নিয়ে যান। দলীয় ৪৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৮/৫। যেখানে ওই দুই ব্যাটসম্যানের পার্টনারশিপ দাঁড়িয়েছিল ১২১ রান। যার গড় ৪.৯৭। এ সময়ই নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমরুল কায়েস। ৭৭ বলে ওই রান করেন তিনি ২ চারের সাহায্যে। এর আগে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ ৫৯ বলে। যাতে ৪ ছিল তিনটি। এরপর ৮১ বলে ৭৪ রানের এক ইনিংস খেলে আউট হন মাহমুদুল্লাহ। দুই ছক্কা ও ৩ চারের সাহায্যে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। দলীয় ২১৫ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি রশিদ খানের বলে। এরপর মাশরাফি খেলতে নামলেও স্বভাবসুলভ সে খেলাটা পারেননি খেলতে। ৯ বলে ১০ করে আউট হন। ইমরুল কায়েসের সাথে এ সময় যোগ দেন মেহেদি হাসান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৪৯ রান। ইমরুল অপরাজিত থাকেন ৭২ রানে। আফতাব নেন ৩ উইকেট। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
বাংলাদেশ : ২৪৯/৭, আফগানিস্তান : ২৪৬/৭
ফল : বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী


আরো সংবাদ



premium cement