২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্ক

এ আইন মৌলিক অধিকার পরিপন্থী : সুজন

-

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিবর্তনমূলক ধারা বাতিল করে আইনটি পুনঃসংশোধনের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সুজন মনে করে, আইনটির অনেক ধারা (৮, ২৮, ২৯, ৩১) নিবর্তনমূলক, যে ধারাগুলোর ব্যাপক অপব্যবহার হতে পারে, বিশেষ করে নাগরিকদের হয়রানি ও কণ্ঠরোধ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই আইনে পরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই পুলিশের হাতে যে কাউকে তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেফতার করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই এই আইনকে অপব্যবহার করে পুলিশ সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা করতে পারে বলে আমরা মনে করি। তা ছাড়া এই আইনের ৩২ ধারায় ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩ অন্তর্ভুক্ত করায় দুর্নীতিসহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলেও আমরা মনে করি।
বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে তথ্য-প্রযুক্তি আইন ব্যবহার করে গত ছয় বছরে শত শত লোককে জবরদস্তিমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং সে আইনটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। এই কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাশ হওয়ার আগে বিভিন্ন মহল থেকে নানান পরামর্শ ও দাবি তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু সরকার সেগুলো পুরোপুরি আমলে নেয়নি; বরং বাতিল হওয়া তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকটি (২৫, ২৮, ২৯ ও৩১) ধারায় ভাগ করে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৫৭ ধারাকে ভেঙে ভেঙে, কিছুটা নতুন শব্দচয়ন করে, ক্ষেত্র বিশেষে কিছুটা শাস্তি কমিয়ে, প্রায় অবিকলভাবে নতুন আইনে রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে সুজন নেতৃবৃন্দ বলেন, যেকোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে মত-বিমত থাকতেই পারে। আমাদের আইন ও সংবিধান যেখানে নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা তথা বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে, সেখানে এই ধরনের নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন হওয়া সত্যিই দুঃখজনক। আমরা মনে করি, এই আইনটি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এটি দেশে গণতান্ত্রিক পরিসরকে সঙ্কুচিত করবে, নাগরিকদের বাক-স্বাধীনতা হরণ করবে এবং নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতাবোধ সৃষ্টি করবে।
বিবৃতিতে ‘সুজন’-এর পক্ষ থেকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বাতিল করে আইনটি পুনঃসংশোধনের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে এই বিলে স্বাক্ষর না করে আইনটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইসি সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান ও পরিচালক (প্রশিক্ষণ) বেলায়েত হোসেনও বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement