১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুষ্ঠু নির্বাচনে ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তা চাইলেন ফখরুল

লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে বৈঠক
-

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওয়াশিংটন ডিসিতে গত শুক্রবার সকালে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে এক বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক দফতরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বৈঠককালে বাংলাদেশ সরকারের নানা অনিয়ম, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়নের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন বিএনপি মহাসচিব। আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসনেরও করণীয় আছে বলে এ সময় কর্মকর্তাদের জানান তিনি।
নিউ ইয়র্ক থেকে এনআরবি নিউজ জানিয়েছে, এ বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতায় সবসময়ই বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক দলের নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।’ এর বেশি আর কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ওই মুখপাত্র।
অন্য একটি সূত্র নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছে, বর্তমান সরকারের বৈরী আচরণের শিকার হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়েছে। সারা দেশে বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং অনেক নেতা গুম হয়েছেন বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈঠকে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
বৈঠকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আওয়াল ও হুমায়ূন কবীর উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুলের দেয়া তথ্য-উপাত্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গোচরে আনা হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই সব কর্মকর্তা বৈঠকে জানান।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে গত বুধবার নিউ ইয়র্কে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। বৃহস্পতিবার তিনি জাতিসঙ্ঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব মেরোসøাভ জেনকার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেও বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক করতে জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতা চান তিনি। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিস্তারিত তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। বিশেষ করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার কারাগারে রেখেছে বলে জাতিসঙ্ঘকে জানান বিএনপি মহাসচিব।
জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগের আগে একটি প্রাতঃরাশ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখানে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. ওসমান ফারুক এবং বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকারী একজন মার্কিন রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বিকেলে লন্ডনের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডনে পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব। সেখানে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেন। তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাতে নিউ ইয়র্ক সফরে জাতিসঙ্ঘ ও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
নির্বাচনের আগে তারেক রহমানের সাথে মির্জা ফখরুলের এটিই শেষ সাক্ষাৎ বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, তারেক রহমান দলের মহাসচিবকে আগামী দিনের আন্দোলন ও নির্বাচন প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের যে প্রক্রিয়া চলছে, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে নিউ ইয়র্ক যান বিএনপি মহাসচিব। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছাবেন বিএনপি মহাসচিব।


আরো সংবাদ



premium cement