২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ

-

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক রাখার সুপারিশ করেছেন ভাইস চ্যান্সলররা। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও নীতিমালার শর্ত পূরণ করলেই তাকে পদোন্নতি দিতে হবে। তাদের কাছে বেতনভাতা বা সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি মুখ্য নয়, মুখ্য হচ্ছে শিক্ষকদের সম্মানের জায়গাটি নিশ্চিত করা।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সলররা আরো বলেন, পদোন্নতির সব স্তরেই শিক্ষকদের মৌলিক গবেষণা অবশ্যই থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পিএইচডি ও গবেষণা ছাড়া পদোন্নতির যোগ্যতা বিবেচনার সুযোগ না থাকাই ভালো।
২০১৭ সালে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় বেতন স্কেলে বৈষম্যের প্রতিবাদে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিকদের আন্দোলন-পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর সাথে শিক নেতাদের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়নে মানসম্মত অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রণীত অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালার খসড়া নিয়ে গতকাল এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের ৪২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা অংশ নেন। কর্মশালায় ৩৩ জন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ পদোন্নতির নীতিমালার খসড়ার ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ আয়োজিত ইউজিসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, মন্ত্রণালয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী এতে বক্তব্য রাখেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন ও প্রশিক্ষণের জন্য অভিন্ন নীতিমালার খসড়া প্রস্তাবের সাথে সঙ্গতি রেখে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে হজরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, যোগ্যদের অবশ্যই পদোন্নতি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে পদ না থাকলেও সরকারি প্রশাসনের মতোই অধ্যাপকদেরও নীতিমালার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিতে হবে। তিনি ২০১৯ সালের মধ্যেই প্রস্তাবিত নীতিমালা চূড়ান্ত করে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান নীতিমালা ও বিজ্ঞাপনের শর্ত পূরণ না করেই অনেক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অতীতের এ সব ঘটনার একটি বিহিত করা দরকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু সান্ধ্যকালীন ও স্বল্পকালীন কোর্স অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান।
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ আশকারী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে নিয়োগ নীতিমালা রয়েছে, তাতে অনেক সাংঘর্ষিক ও উচ্চশিক্ষা বিধ্বংসী ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো বন্ধ করতে অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সাথে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলোর ফেডারেশনের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, যোগ্যতার শর্ত পূরণ করলেই পদোন্নতি দিতে হবে। প্রতিবন্ধকতা নয়, উচ্চশিক্ষার মান ও শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসরদের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করা হয়নি। তিনি ২০১৯ সালের মধ্যেই অভিন্ন নিয়োগ-পদোন্নতির নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে নিয়োগ-পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্যতার শর্তের যে কিছু ভিন্নতা রয়েছে তা প্রস্তাবিত অভিন্ন খসড়া স্পষ্ট করার তাগিদ দিয়ে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও যশোর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা বক্তব্য রাখেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. হারুন-আর-রশিদ বলেন, শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়নের জন্যও পৃথক এবং মানসম্মত অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা অনেক সময় শিক্ষকদের সম্মানজনক আচরণ করে থাকেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রতকর হয়ে উঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালাও একইসাথে প্রণয়নের পরামর্শ দেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান অভিন্ন নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা ও এ ক্ষেত্রে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের এন্টি পয়েন্টসহ সর্বস্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলে এটি একটি রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি-পদোন্নয়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। ভিসিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সবার মতামত যাচাই ও বাছাই এ বিষয়ে গঠিত কমিটি নীতিমালা চূড়ান্ত করবে। এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং যোগ্যতম প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩

সকল