২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

ভারত ৩ : ১ পাকিস্তান
-

ক্রিকেট বা হকির মতো এতটা আলোচনায় আসে না ভারত ও পাকিস্তানের ফুটবল লড়াই। এরপরও উপমহাদেশের এই দুই দেশের ফুটবল ম্যাচে থাকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ। ২০০৩ সালে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই পাকিস্তান ১ গোলে হারিয়েছিল ভারতকে। তবে কাল আর সে পথে হাঁটতে পারেনি পাকিস্তান। বরং তাদের প্রথমবারের মতো সাফের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন সেমিতেই থামিয়ে দেয় সাতবারের এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। ৩-১ গোলে ম্যাচ জিতে ভারত এখন ১৫ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের সাথে ফাইনালের অপেক্ষায়। ২০০৯ সালে ঢাকা সাফের ফাইনালেও দেখা হয়েছিল ভারত ও মালদ্বীপের। তাতে শেষ হাসি ভারতীয়দের। প্রসঙ্গত সে আসরের মতো এবারো ভারত এসেছে অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে।
এবার সাফের এই দ্বিতীয় সেমি ফাইনালের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার নেপথ্যে উভয় গোলরক্ষকের দৃঢ়তা। ১১, ২৫ এবং ২৭ মিনিটে পাকিস্তানের পোস্ট অক্ষত থেকেছে মূলত গোলরক্ষকের প্রবল প্রতিরোধে। কখনো ডানে কখনো বামে শরীর ফেলে দলকে গোলের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন ইউসুফ ইজাজ ভাট। তার এই কৃতিত্বে হতাশ হতে হয় যথাক্রমে ভিনিত রাই, মানভির সিং এবং আশিক কুরুনিয়াকে। শেষ প্রহরী এভাবে দলকে রক্ষা করার পর পাকিস্তানও আক্রমণে উঠে আসে। শুরু থেকে কাউন্টার অ্যাটাক-নির্ভর ম্যাচ খেলতে থাকা পাকিস্তান ৩৬ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ পায়। মুহাম্মদ রিয়াজের শট রুখে দিয়ে ভারতের কিপার সুভাশীষ বোস তার ভুলেরই দায় শোধ করেছেন। ডিফেন্ডারের ব্যাক পাস হাত দিয়ে ধরে বক্সে হ্যান্ডবল করেন তিনি। তা থেকেই ফ্রি-কিক এবং রিয়াজের শট। ইনজুরি টাইমে পাকিস্তান লিড পায়নি কপালদোষে। অধিনায়ক সাদ্দাম হোসেনের লবে ব্যাক হেড নেন হাসান বশির। তাতে আগেই সুভাশীষ বোস বলের ফাইট মিস করলেও বল চলে যায় বার ঘেঁষে।
৪৯ মিনিটে ভারতের লিড। তা চমৎকার আক্রমণের সফল পরিসমাপ্তিতে। আশিক কুরুনিয়ার ক্রসে মানভির সিংয়ের খুব কাছ থেকে করা ডান পায়ের ফিক প্রথম পোস্টে অসহায় করে দেয় গোলরক্ষক ইউসুফকে। ৬৯ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ ভারতের। সাফের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করেন সেই মানভির সিং। বদলি লালিয়ানজুলা মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পাস দেন ভিনিত রাইকে। ভিনিত সে বল মানভিরকে বাড়িয়ে দিলে ডান পায়ের চমৎকার বুদ্ধিদীপ্ত শটে আসরের তৃতীয় গোল করেন তিনি। মালদ্বীপের বিপক্ষেও গোল ছিল মানভিরের। ৮৪ মিনিটে ভারত তাদের তৃতীয় গোল পায় দুই মিনিট আগে মাঠে নামা বদলি সুমতি পাসির হেডে। আশিক কুরুনিয়ার ক্রসে হেড করেন তিনি। ৮৮ মিনিটে পাকিস্তানের হাসান বশির দূরপাল্লার শটে ব্যবধান কমান। এর আগে ৮৬ মিনিটে থাইল্যান্ডের রেফারি সিভাকর্ন উদম মাঠে মারামারি করার জন্য পাকিস্তানের মহসিন আলি এবং ভারতের লালিয়ানজুলাকে লাল কার্ড দেখিয়ে বহিষ্কার করেন।
তবুও খুশি পাকিস্তানের কোচ : আবারো ফাইনালে খেলতে ব্যর্থ পাকিস্তান। ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে এবার সেমিতে বিদায় পাকিস্তানের। অবশ্য এতে অতৃপ্তি নেই দলের ব্রাজিলিয়ান কোচ হোসে অ্যান্থনিও নগেইরার। তার মতে, আমরা দুই মাসের অনুশীলন নিয়ে এসেছি। অন্য দিকে ভারতের প্রস্তুতি তিন বছরের। এর পরও পাকিস্তান দল ভালো খেলেছে এই আসরে। এরপর তিনি যোগ করেন. আমাদের দলে চার-পাঁচজন ছাড়া অন্য সবাই তরুণ। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের আছে বেশ কয়েকজন ফুটবলার। তার অভিযোগ, ‘ভিসা না পাওয়ায় আসতে পারেননি ডেনমার্ক প্রবাসী আদনান। তিনি আসলে বেশ উপভোগ্য হতো এই আসর। তিনি আমাদের সেরা ফুটবলার।’ মূল জাতীয় দলের ফুটবলারদের রেখে এসেছে ভারত। তাদের প্রস্তুতি চলছে এশিয়ান কাপের জন্য। এর পরও তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে ভারত এখন শিরোপার শেষ লড়াইয়ে। কোচ স্টিফেন কনস্টান্টিনের মতে, এই ফুটবলারদের মধ্যে ভালো করার তীব্র ক্ষুধা। এই দলে অনূর্ধ্ব-২০ দলের চারজন ফুটবলার আছে। সাফে আসার আগে অস্ট্রেলিয়া সফর এবং সেখানে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খুব কাজে দিয়েছে। তা ছাড়া অত্যাধুনিক আমাদের ট্রেনিং সিস্টেম। তার মতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে আমাদের গোল পাওয়া উচিত ছিল। তা না হলেও বিরতির পরপরই গোল পাওয়ায় আর সমস্যা হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement