২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিএনপিকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণ

নিউ ইয়র্কে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে একটি টিম
বিএনপিকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণ -

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির সাথে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব। দলটিকে এই আগ্রহের কথা জানিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিবকে নিউ ইয়র্কে যেতে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। দলটির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণের বিষয়টি অবহিত করেন মির্জা ফখরুল ফখরুল ইসলাম।
জানা গেছে, বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধির মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব বরাবর আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটি ও কূটনীতিসংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের কাছে একাদশ জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সুপারিশমালা তুলে ধরবে বিএনপি। একই সাথে বিএনপিসহ বিরোধী দল-মতের ওপর ‘সরকারের দমনপীড়নের’ চিত্রও তুলে ধরা হবে। বিগত তিন সিটি নির্বাচন, গুম, খুনসহ রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের বর্ণনাসহ সমসাময়িক পরিস্থিতির একটি সচিত্র প্রতিবেদনও জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
গত জুলাই মাসের শুরুতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তখন তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখা। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও যৌথ বৈঠক করেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ওই সময় জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের সাথে একটি বৈঠকের প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু তা যে কোনো কারণেই হোক হয়নি। এরই প্রোপটে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বিএনপিকে নিউ ইয়র্কে ডেকেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিএনপি নিরপে ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময়ও বিএনপি একই দাবিতে অনড় ছিল। ওই নির্বাচনের আগে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করে সমঝোতায় আনার চেষ্টা করেছিলেন তৎকালীন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের পাঠানো বিশেষ দূত তারানকো। যদিও তারানকোর সে সমঝোতার ফর্মুলা পরে মানা হয়নি বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে।
গুলশানে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি, সুচিকিৎসা, আগামী সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনকালীন নিরপে সরকারের দাবি, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
স্থায়ী কমিটির সাথে উপদেষ্টাদের বৈঠক
দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের সাথে বৈঠক করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। গুলশানে চেয়ারপারসন কার্যালয়ে গতকাল রাত সাড়ে ৭টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও ৪০ জন উপদেষ্টা অংশ নেন। উপদেষ্টাদের মতামতের পর স্থায়ী কমিটি এবং সর্বশেষ সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বক্তব্য দেন।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক উপদেষ্টা জানান, তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামকে। একই সাথে তারা বলেছেন, আইনী প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না। রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপে সরকার নিয়েও রাজপথের আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে জানান উপদেষ্টারা।


আরো সংবাদ



premium cement