১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশে সড়ক উন্নয়নব্যয়ে বিশ্ব রেকর্ড

-

চীন ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে চার লেন সড়ক নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের ব্যয়ও অনেক বেশি। ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের দুই লেনের অংশ চার লেনে উন্নীত করতে ব্যয় হচ্ছে প্রতি কিলোমিটারে ২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা। বিশ^ব্যাংকের জরিপ অনুযায়ী, ভারতে এই ব্যয় ১০ কোটি টাকা এবং চীনে গড়ে ১৩ কোটি টাকা। দুর্নীতি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ না হওয়া, প্রকল্প বাস্তবায়নে অঙ্গ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় বেশি বলে বিশ^ব্যাংক ২০১৩ সালের এক জরিপে বলেছে।
সম্প্রতি এক প্রকল্প প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, ফেনী-নোয়াখালী ৩০ দশমিক ১৯ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই লেনের অংশ চার লেনে উন্নীত করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮২৯ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ২৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা; যা যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা কমিশনের মূল্যায়ন কমিটির সভা থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ব্যয়ও মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে ধরা হযেছে। ১৫ দশমিক ৭৫২৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। প্রতি হেক্টরে ব্যয় হচ্ছে ১২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী জমির মূল্য নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে পিইসি থেকে। পিইসি সভায় প্রকল্পের প্রতিটি অঙ্গ ব্যয়ের অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে ঢাকা-সিলেট চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পটিতে প্রতি একর জমির মূল্য চার কোটি ৪৩ লাখ টাকা, সেখানে এই প্রকল্পে দর হচ্ছে পাঁচ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
এ দিকে, ভারতের এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, জমি অধিগ্রহণ ব্যয় যুক্ত করে চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় গড়ে ৮ থেকে ৯ কোটি রুপি, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় সাড়ে ৯ থেকে সাড়ে ১০ কোটি টাকা। আর চীনের (২০১০-১৫) ১২তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট এক সমীক্ষা অনুযায়ী, সেখানে চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে গড়ে ব্যয় ১৬ থেকে ১৭ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা। তবে দুই লেনের মহাসড়ক চার লেন করতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয় ১০ কোটি টাকার কম।
বিশ^ব্যাংক গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, বাংলাদেশে প্রকল্প প্রণয়নের সময় বাস্তবায়নে যে ব্যয় ধরা হয়, পরবর্তী সময়ে সেই ব্যয় আর ঠিক থাকে না। সেটা বাড়ানো হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুর্নীতি। আর এভাবেই বাড়ে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয়। এ কারণে প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রতিবেশী ভারত ও চীনের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় হয় বাংলাদেশে। বিশ্বব্যাংক তাদের ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখিয়েছে, ইউরোপে চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে বাংলাদেশী মুদ্রায় কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয় ২৮ কোটি টাকা। পাশের দেশ ভারতে এ ব্যয় ১০ কোটি টাকা। আর চীনে তা গড়ে ১৩ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের সাথে বাংলাদেশের সড়ক প্রকল্প নিয়ে আলাপকালে তিনি জানান, বাংলাদেশে যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণ সবচেয়ে বড় সমস্যা। জমি অধিগ্রহণ ও এর মূল্য পরিশোধে দুর্নীতি হয়। সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ কাজও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রথম দুর্নীতি হয় জমি অধিগ্রহণে। সেখানে জমির মালিককে কম মূল্য দিয়ে সরকারকে দেখানো হয় বেশি মূল্য। তার মতে, টেন্ডারে প্রতিযোগিতা না থাকায় সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণের জন্য মালামাল কেনার ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়। এ ছাড়া এ দেশে কোনো প্রকল্পই সময়মতো শেষ হয় না। ফলে সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যয়ও পাল্লা দিয়ে বাড়ে।
চার লেনের সড়কের উন্নয়নব্যয় (কিমি.)
দেশের নাম-------ব্যয়
বাংলাদেশ----২৮ কোটি টাকার বেশি
চীন ---- ১৩ কোটি টাকা
ভারত ---- ১০ কোটি টাকা
বিশ্বব্যাংক এশীয় গড়---১৪ কোটি টাকা

 


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল